ধর্ষণের জন্য নারীদের পোশাককে দায়ী করলেন অনন্ত জলিল

নারী ও মেয়েদের ওপর ধর্ষণ এবং সহিংসতার ক্রমবর্ধমান ঘটনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে, 'অযাচিত যৌন হয়রানিকে’ আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নারীদের খোলামেলা পোশাককে দায়ী করেছেন অভিনেতা অনন্ত জলিল। 

তার স্ত্রী বর্ষার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে নারীদেরকে নিজের ‘ভাই হিসেবে’ কিছু পরামর্শ দিতে শোনা যায় এই অভিনেতাকে।

তিনি বলেন, ‘নারীরা (বাংলাদেশে) অশালীন পোশাক পরেন অন্য দেশের নারী, সিনেমা, টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে। এ ধরনের পোশাকের কারণে মানুষ আপনার মুখের পরিবর্তে আপনার শরীর দেখে। তারা (নারীদের সম্পর্কে) অশ্লীল মন্তব্য করে এবং ধর্ষণের কথা চিন্তা করে।’

‘আপনারা কি (নারীরা) নিজেকে আধুনিক বলে গণ্য করেন? আপনি যে পোশাকটি পরছেন তা কি আধুনিক নাকি অশ্লীল? একটি আধুনিক পোশাক বলতে কেবল আপনার মুখ দেখানো এবং শালীন পোশাক দিয়ে আপনার শরীর আবৃত থাকা বুঝায় যেটিতে আপনাকে সুন্দর দেখায়,’ বলেন অনন্ত।

তিনি আরো বলেন, ‘মুখ ব্যতীত পুরো শরীর আবৃত হয় না এমন যেকোনো পোশাকেই নারীদের “অত্যন্ত খারাপ" দেখায়।’

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই অভিনেতা বলেন, ‘ছেলেদের মতো টি-শার্ট পরে আপনি রাস্তায় নামবেন এবং যখন সেখানে অসম্মানিত বা ধর্ষিত হয়ে ঘরে ফিরে আসবেন তখন হয় আপনি আত্মহত্যা করতে পারেন অথবা প্রকাশ্যে আপনি মুখ দেখাতে পারবেন না।’

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০৮টি গণধর্ষণসহ প্রায় এক হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন।

‘শালীন’ পোশাক ধর্ষণ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা নিবৃত করবে উল্লেখ করে অনন্ত বলেন, ‘আপনি যদি শালীন পোশাক পরেন তাহলে মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধার সাথে দেখবে।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যের ভিত্তিতে গণমাধ্যম থেকে সংকলিত তথ্যে দেখা যায়, ধর্ষণের শিকার ৬৮ জনের বয়স ৬ বছরের কম। এছাড়া আরও ১৩৯ ভুক্তভোগীর বয়স ছিল ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তবে খুব কম সংখ্যক ঘটনাই এই তথ্যের আওতায় এসেছে বলে মনে করা হয় কারণ ধর্ষণের পর বেঁচে ফেরা বেশিরভাগ নারী এবং মেয়েরাই সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে ও নিজেদের সুরক্ষার জন্য ভয়ে এ কথা প্রকাশ করে না।

ধর্ষণ করার আগে পুরুষদের দু'বার ভাবার কথা উল্লেখ করে অনন্ত বলেন, ‘যদি আপনার স্ত্রী, বোনের সাথে একই ঘটনা ঘটে তাহলে আপনি কি করবেন?’

ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের আইন চালু করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।

সম্প্রতি সিলেট এমসি কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানির ঘটনা দেশব্যাপী বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। নারীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সহিংসতার জন্য কঠোর আইনের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : অনন্ত জলিল

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //