গত সপ্তাহে নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল নিয়ে গড়িমসি, ছবির শুটিং না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি এবং সহ–প্রযোজক এক নারীকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ এনে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন অস্ট্রেলিয়া সহ–প্রযোজক রহমত উল্লাহ।
শাকিব খানের সঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্টেক্স মিডিয়ার চুক্তি হয়। আর ভার্টেক্স মিডিয়ার সঙ্গে সহ–প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হয় সিনেফ্যাক্ট, যার মালিকানায় আছেন মাহিন আবেদীন, রহমত উল্লাহ ও অস্ট্রেলীয় একজন নারী।
শাকিব খানের বিরুদ্ধে রহমত উল্লাহ অভিযোগ উত্থাপন করলেও এসবের কিছুই জানেন না অস্ট্রেলীয় অংশের দুই সহ–প্রযোজক। এমনকি শাকিব খানের সঙ্গে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়েছে, তার কর্তাব্যক্তিরাও কিছুই জানেন না।
সম্প্রতি এ সম্পর্কে মুখ খুললেন ভার্টেক্স মিডিয়ার স্বত্বাধিকারী জানে আলম। তিনি বললেন, ‘শাকিব খানের সঙ্গে আমার প্রতিষ্ঠান ভার্টেক্স মিডিয়ার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। আর আমার সঙ্গে চুক্তি হয় সিনেফ্যাক্টের। ওই প্রতিষ্ঠানের তিনজনের একজন রহমত উল্লাহ, তাদের তিনজনের সঙ্গে ছবিতে ৩০ ভাগ বিনিয়োগ নিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়। শাকিব খানের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই। রহমত উল্লাহ যে বাংলাদেশে এসেছেন, এটা আমার নলেজেও নেই। তিনি যে অভিযোগ পাবলিশড করেছেন, এটাও আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’
প্রায় সাত বছর ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিং বন্ধ ছিল। শাকিব খানের শিডিউল না পাওয়াই কি এ ছবির শুটিং বন্ধ থাকার কারণ?
এ প্রসঙ্গে আলম বলেন, ‘আমাদের দুই পক্ষের (ভার্টেক্স মিডিয়া ও সিনেফ্যাক্ট) অন্তর্কোন্দলের কারণে ছবির কাজ কিছুদিন বন্ধ ছিল। ছবির কাজ বন্ধের ব্যাপারে শাকিব খানের কোনো হাত নেই। রহমত উল্লাহ বারবার যে বলছেন শিডিউলের কথা, এই শিডিউল শাকিব খানের কাছে চাওয়ার রাইটও তাঁর নেই। এটা নিয়ে কথা বলবে শুধু ভার্টেক্স মিডিয়া। তিনি যে এ কাজটা করেছেন, আমাদের কারও (অস্ট্রেলিয়াতে থাকা পরিচালক আশিকুর রহমান এবং দুই সহ-প্রযোজক) সঙ্গে কথা বলে করে নাই। কার সঙ্গে কথা বলে এমনটা করেছেন, এটা আমি জানিও না। এ ঘটনা দেখার পর আমি এগিয়ে এসে এটা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মিটিয়ে দেওয়ার কারণ হচ্ছে, আমার আর্টিস্ট, ডিরেক্টর ও শাকিব খানকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। আমার ছবিটার কাজ শুরু হবে। এ বছরেই ছবির কাজটি করব। সে প্রক্রিয়ায় আমরা আগাচ্ছি।’
তাহলে অস্ট্রেলিয়ার সিনেফ্যাক্টকে সঙ্গে নিয়েই কি ছবির পরবর্তী কাজ এগোবেন? এমন প্রশ্নে জানে আলম জানিয়েছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার ওই প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে ছবির কিছু অংশের শুটিং করেছে। একটা ছবি যদি দুই ঘণ্টা ২০ মিনিটের হয়, তাহলে এখন পর্যন্ত ২০ মিনিটের কাজ হয়েছে। সেভাবেই তাঁরা শেয়ারও পাবেন। আমার কাছে সব হিসাবও আছে। পরিচালক আশিকুর রহমান ও সহ–প্রযোজক মাহিন আবেদীন সে হিসাবও দিয়েছেন। আমি এখন আবার অস্ট্রেলীয় প্রযোজক মাহীন আবেদীন ও রহমত উল্লাহর সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেছি। আমি তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছি, ছবির বাকি শুটিংয়ে তারা বিনিয়োগ করবেন কি না; তাঁরা বলেছেন, আমরা করব না। এখন আমি ছবির শুটিং শেষ করে তাঁদের সঙ্গে বসব, ছবির দৈর্ঘ্য অনুযায়ী তাঁরা শেয়ার পাবেন।’
শাকিব খানের সঙ্গে আপনার সম্পর্কটা কেমন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভালো, শুরু থেকে যেমন ছিল। এখন পর্যন্ত সবকিছুতে তিনি রেসপন্স করেছেন। এ ছবি নিয়ে কোনো সমস্যা হলেও তিনি অথবা তাঁর প্রতিনিধি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু ভার্টেক্স মিডিয়া ও সিনেফ্যাক্টের ভুল বোঝাবুঝির কারণে পাঁচ বছর ছবির কাজ বন্ধ ছিল। আমিও তখন আর এগিয়ে আসিনি; কারণ, সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে তবেই আসতে চেয়েছি। এর মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছি। তাই “অপারেশন অগ্নিপথ” ছবির কাজটা এ বছরই শুরু করতে চাইছি। কিন্তু এখন যেসব ঘটনা ঘটছে, তা ছবি বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত ইস্যুর। এতে আমার প্রতিষ্ঠানের সুনামের বিষয়টিও জড়িত আছে। তাই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে খুব শিগগিরই একটি ফেসবুক পোস্ট দেব।’
‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিংয়ে শাকিব খানের পেশাগত অবহেলার কারণে চলচ্চিত্রটির ক্ষতিসাধন হওয়াতে সহ–প্রযোজক রহমত উল্লাহ ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। প্রসঙ্গটি উঠতেই জানে আলম বললেন, ‘আসলে কার কাছে কে ক্ষতিপূরণ চাইবে, এটা প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ, শাকিব খানের সঙ্গে তার বা তাদের কোনো চুক্তিই নেই। ছবির কারণে যদি তারা ক্ষতিপূরণ চায়ও, তা ভার্টেক্সের কাছে চাইতে পারে।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh