সোহানুর রহমান সোহান: তারকা গড়ার কারিগর

ঢাকাই সিনেমার গুণী পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। গেল ১৩ সেপ্টেম্বর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে ঢাকাই চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে । এই গুণী নির্মাতা ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবকের মতো। তিনি তার পুরোটা জীবন ব্যয় করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাণ ও নতুন শিল্পী তৈরির কাজে। তাকে বলা হয় তারকা গড়ার কারিগর। ঢালিউডের আজকের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তার হাত ধরেই বড় পর্দায় আসেন। এই নির্মাতার ‘অনন্ত ভালবাসা’ (১৯৯৯) সিনেমা দিয়েই চলচ্চিত্রে পা রাখেন কিং খান। তার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে এখনো নিজের রাজত্ব ধরে রেখেছেন এ নায়ক। ওই সময় শাকিবের সঙ্গে একই সিনেমাতে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা ইরিন জামানের। এ অভিনেত্রী বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমীর ছোট বোন। 

১৯৯৩ সালে এ নির্মাতার হাত ধরেই মৌসুমীও বাংলা সিনেমায় নাম লেখেন। তার সঙ্গে ঢালিউডের সিনেমায় অভিষেক হয় প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ওই সময় এ জুটি দারুণ সাড়া ফেলে। ক্যারিয়ারের অল্প সময়ে প্রয়াত এ নায়ক জনপ্রিয়তার শীর্ষে নাম লেখেন; অভিনয় করেন ২৭টি সিনেমাতে। সালমান প্রয়াত হলেও এখনো ফুরিয়ে যাননি প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। নির্মাতা সোহানের হাত ধরে ঢাকার সিনেমায় আসেন আরও এক তারকা শাকিল খান। সালমান শাহ-পরবর্তী বেশ কয়েক বছর এ তারকা দাপিয়ে বেড়ান। তার প্রথম সিনেমা ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’। এর পর আরও অনেক সিনেমায় তাকে দেখা যায়। সোহানের মৃত্যুতে অন্যদের মতো ভেঙে পড়েন তার হাতে গড়া তারকারাও।

শাকিব খান বলেন, ‘আমার এই শাকিব খান নামটি সোহান ভাইয়ের দেওয়া। সত্যি কথা বলতে তার সম্পর্কে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই তো কয়েক দিন আগেও সোহান ভাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। বলেছিলেন- তিনি অসুস্থ, উন্নত চিকিৎসা নিতে জাপান যাবেন; কিন্তু ভাবির মৃত্যুর একদিন পরই সোহান ভাইও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। সোহান ভাইকে মহান আল্লাহ পরপারে শান্তিতে রাখুন।’

জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা বলেন, সোহানুর রহমান সোহান যখন সহকারী পরিচালক ছিলেন তখনই আমি তার সিনেমাতে কাজ করেছি। আমি তাকে পরিচালক বলব না, তিনি একজন দারুণ মেধাবী নির্মাতা। তার হাত ধরে অনেক তারকা আমরা পেয়েছি। ৯০ দশকে তার মতো আর কোনো নির্মাতা এত তারকা তৈরি করতে পারেনি। সোহানুর রহমান সোহান সত্তরের শেষের দিকে পরিচালক শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন। এর পর পরিচালনায় নাম লেখান এবং নির্মাণ করেন অসংখ্য সিনেমা। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ মুক্তি পায় ১৯৮৮ সালে। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘পরাণ যায় জ্বলিয়ারে’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ ও ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ইত্যাদি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //