চলচ্চিত্র অভিনেতা কাজী মারুফ। ২০০১ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ইতিহাস’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন এ অভিনেতা। ঘরে তুলে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পরবর্তী সময়ে ‘অন্য মানুষ’, ‘দেহরক্ষী’, ‘ক্যাপ্টেন মারুফ’ ‘সর্বনাশা ইয়াবা’ ও ‘ইভটিজিং’সহ আরো অনেক সিনেমায় দেখা যায় তাকে।
সর্বশেষ গত ঈদে দীর্ঘদিন পর মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘গ্রীন কার্ড’ সিনেমাটি। এই অভিনেতা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। সেখান থেকে সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এন আই বুলবুল
গত ঈদে ‘গ্রীন কার্ড’ মুক্তি
দিয়েই আবার উড়াল দিলেন। দেশে ফেরার কি পরিকল্পনা আছে?
চলতি বছরে আর দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। দেশের এখন যে পরিস্থিতি এতে দেশে ফিরে করব কী? আমাকে তো পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচতে হবে। সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে আসব।
গত ঈদে মুক্তি পেয়েছে মারুফের ‘গ্রীন কার্ড’ সিনেমাটি
আপনার কথার সূত্র ধরে বলতে হয়,
তাহলে দেশের পরিস্থিতি ভালো নেই?
আমার কথায় অনেকের পছন্দ হবে
না। তবু বলছি, এ দেশটাকে সবাই ভোগ করছে। দেশের কথা কেউ ভাবে না। দেশকে নিয়ে কেউ ভাবেনি
বলেই আজ এমন পরিস্থিতির মুখে আমাদের পড়তে হয়েছে। দেশপ্রেম সবার মুখে মুখে শুধু, কিন্তু
বাস্তবে তার বিপরীত। না হলে আমাদের কেন দেশ ছেড়ে আসতে হচ্ছে। আমাদের রাজনীতিবিদরা যদি
দেশকে সেভাবে গড়তো তাহলে নতুন প্রজন্মকে দেশের বাইরে যাওয়ার চিন্তা করতে হতো না।
নতুন একটি সিনেমা শুরু করার
কথা ছিল। সেটির কী খবর?
নতুন একটি সিনেমা শুরু করার
কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটি হচ্ছে না। সিনেমা করে যদি টাকা না উঠে আসে তাহলে কিভাবে সিনেমা
করব? গত ঈদে তো দেখলাম সিনেমার ব্যবসা কেমন হচ্ছে। এ সময়ে সত্যি বলতে সিনেমার জন্য কেউ টাকা ইনভেস্ট করতে চায় না। কারণ একটি সিনেমা করার পর সেটির পুঁজি ফেরত আসে না।
কেন সিনেমার পুঁজি ফেরত আসছে
না?
গত কয়েক বছর আমাদের সিনেমা একনায়ককেন্দ্রিক হয়ে আছে। একজনকে দিয়ে তো ইন্ডাস্ট্রি চলে না। এরপরও এক নায়কের ওপরই সবাই ভর দিয়ে আছে। ঈদে দেড়শ সিনেমা হলের কেউ একাই ১০০ নিয়ে যাচ্ছে। আর বাকি সবাই দু-চারটি করে হল পায় ঈদে। এভাবে তো কোনো প্রযোজক লাভবান হবেন না। একজন প্রযোজক যদি তার টাকা ফেরত না পান তাহলে এক সিনেমার পর তাকে আর পাওয়া যাবে- এটাই স্বাভাবিক।
সিনেমার এ খরা কীভাবে পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন?
পরিবর্তন সম্ভব। তবে সেটি না
করে দেখানো পর্যন্ত কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমার সিনেমা ‘ক্যাপ্টেন মারুফ’ দিয়েই
এ দেশে ডিজিটাল সিনেমা শুরু করেছি। তখন অনেকেই নানারকম কথা বলেছিল। আর এখন তো সবাই
ডিজিটাল সিনেমা করছে। একই রকম নতুন কিছু আমি করে দেখাব। সত্যি বলতে এ দেশে এক্সপেরিমেন্টাল
কাজে কেউ পার্টনার হতে চায় না। তবু আমাদের সেটি করতে হয়। আমার বিশ্বাস কীভাবে সিনেমার
বাজার ঘুরে দাঁড়াবে, সেটি আমি করে দেখাতে পারব।
আমাদের সিনেমা অঙ্গনের কী
পরিবর্তন প্রয়োজন?
আমরা কথা বলি ইন্ডিয়ার মতো, কিন্ত কাজ করি তার বিপরীত। আমাদের কথা আর কাজের কোনো মিল নেই। যেটা সম্ভব না সেটা নিয়েই আমরা বড় বড় কথা বলি। এগুলো বাদ দিয়ে আমাদের কাজের দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমাদের এখন সিনেমার যে বাজেট থাকে সেটাও আমরা ঠিক মতো ব্যবহার করি না। এছাড়া গল্পের দিকেও আমাদের গুরুত্ব কম। একটা সময় আমাদের প্রত্যেকটি সিনেমার ভিন্ন ভিন্ন গল্প দেখা যেত।
সর্বনাশা ইয়াবা সিনেমায় মারুফ-প্রসূন আজাদ
আপনার ক্যারিয়ারে প্রয়াত মান্না এবং শাকিব খান দুজনকেই পেয়েছেন। তাদের নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
মান্না আংকেলকে আমি খুব
ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। বাবার সিনেমাতে কাজ করার কারণে তার সঙ্গে মেশার ও কথা
বলার অনেক সুযোগ হয়েছে। এছাড়া আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই শাকিব খানকে দেখছি।
অনেক স্ট্রাগল করেই আজ সে বড় তারকা। আমি মনে করি, মান্না আংকেল সিনেমা বুঝতেন।
একইরকম এখন শাকিব খান সিনেমা বোঝেন। এ কারণেই তারা অন্যদের থেকে আলাদা হতে
পেরেছেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : কাজী মারুফ শাকিব খান ঢালিউড
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh