রাঙ্গামাটিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজি বীজ বিতরণ

রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজির বীজ বিতরণ করছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়নের ধুপ্পারচর গ্রামে গিয়ে শাক সবজি বীজ বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী ও উপজেলা কৃষি অফিসার মেজবাহ্ উদ্দিন।

প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে বিলাইছড়ি উপজেলার আশপাশের গ্রামগুলোতে দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে শাক-সবজির বীজ বিতরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামে বিতরণসহ আশপাশের গ্রামের ৮০-১০০টি পরিবার শাক-সবজির বীজ সংগ্রহ করেছেন। বিতরণ করা এসব শাক-সবজি বীজের মধ্যে রয়েছে, মিষ্টিকুমড়া, চিচিংগা, ঝিংগা, হাইব্রিড চিচিঙ্গা,  হাইব্রিড ঝিংগা, ঢেঁড়স, বরবটি, তিতা করলা, পুইশাক, বাটি শাক ও লাল শাক।

মূলত সারাদেশের মতো পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতেও করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয় হাটবাজার বন্ধ রয়েছে। জরুরি পরিসেবা ছাড়া সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় বিপাকে পড়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের পাশে সহায়তা অব্যাহত রাখছে প্রশাসন। তবুও শাক-সবজি ক্রয়সহ বিভিন্ন কাজে সাধারণ মানুষকে বাজার মুখী হতে হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ জন যেন অতি জরুরি কাজ ছাড়া বাজারমুখী না হন এ জন্যই বিলাইছড়ি উপজেলায় শাক-সবজির বীজ বিতরণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কৃষি বিভাগ এ কাজে সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমনি মানুষকে ঘরের বাহিরে বের হতে হবে না; তেমনি বাজারেও শাক-সবজির সংকট দেখা দিবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের এই মহামারী সময়টাকে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে কিছু হলেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের শাক-সবজির আবাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা উপজেলার দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে শাক-সবজির বীজ বিতরণ করবো। পরবর্তীতে আরো বীজ বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা এ কার্যক্রমের প্রথমদিনে ৮০-১০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছি। সকালে আমরা উপজেলার ধুপ্পারচর এলাকায় বীজ বিতরণ করেছি।


ইউএনও আরো জানান, অনেকেই আছেন বীজ কিনে শাক-সবজি চাষ করতে চান না। তাই আমরা কৃষি বিভাগের মতামত নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীজ ক্রয় করেছি। ইতোমধ্যে উপজেলাতে আমার নিজস্ব বাংলোসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানেরগুলোর খোলা জায়গায় শাক-সবজির চাষাবাদ করার জন্য মরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমরা সবাই যদি এসময়ে শাক-সবজি চাষের গুরুত্ব অনুধাবন করে চাষাবাদ করি তাহলে ভবিষ্যতেও আমাদের খাদ্য সংকটে পড়তে হবে না। এমনকি অল্প কিছু শাক-সবজির অন্য দূর-দূরান্ত থেকে বাজারে আসতে হবে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেজবাহ্ উদ্দিন বলেন, চলমান করোনা পরিস্থিতি ও তার পরবর্তী সময়ে দেশে কি পরিস্থিতি হবে তা কেউ বলতে পারছে না। তবে ধারণা করা যায় আমদানি রফতানি বন্ধে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়তে পারে দেশ। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বাড়িতে খোলা জায়গায় শাক-সবজির চাষাবাদের মরামর্শ দিয়েছেন। তাই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে উপজেলার দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে বীজ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি অফিসের খালি জায়গায় শাক-সবজির চাষাবাদের মরামর্শ দেয়া হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার একটি গ্রামের কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বীজ বিতরণ করেছি। এবং আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //