শরণখোলার বেড়িবাঁধে দ্বিতীয় দফায় ভাঙ্গন, বাঁধের কাজ শুরু

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫-১ পোল্ডারের বাগেরহাটের শরণখোলা অংশে দ্বিতীয় দফায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত দুই দিনে শরণখোলা উপজেলার সাউথখালি ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর পাড়ের গাবতলা-বগী গ্রাম সংলগ্ন বাঁধের ১০০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

শনিবার রাতে আকস্মিক ভাঙ্গনের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। লোকালয়ে যাতে পানি না ঢুকতে পারে সেজন্য ভোররাত থেকেই রিং বেড়িবাঁধের (গ্রাম রক্ষা বাধ) কাজ শুরু করা হয়।
তবে নদী শাসন না করে স্বল্প পরিসরের এই কাজে খুশি নয় এলাকাবাসী। নদী শাসন টেকসই  ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তা না হলে বগী ও গাবতলা গ্রামের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয় খান শফি উদ্দিন ও জাকির হোসেন বলেন, প্রতি বছরই বগি ও গাবতলা এলাকায় পুরোনো বাঁধ ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদী খেয়ে ফেলে আমাদের বাপ দাদার ভিটে মাটি। এবারও শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। শুক্রবার ও শনিবার রাতে ভাঙ্গনে প্রায় একশ মিটার বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সাথে কয়েক একর জমিও চলে গেছে নদীতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সিআইপি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে রিং বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এটা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। নদী শাসন করে টেকসই বেড়ি বাধ নির্মাণের দাবি জানান তারা।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, ভাঙ্গনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। যাতে লোকালয়ে পানি ঢুকতে না পারে সে জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। দু একদিনের মধ্যেই রিং বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হবে। জমি অধিগ্রহণ ও নদী শাসন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে ওই স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দেন তিনি।

২০০৭ সালে প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার মানুষের সব থেকে জানমালের ক্ষতি হয়। তারপরে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচতে এই দুই উপজেলাবাসীর একটাই দাবি ছিলো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার গত ২০১৫ সালে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৬২ টি কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় –৬০ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নদী শাসন করে কাজ না করার কারণে শরণখোলা উপজেলার বগী  ও গাবতলা গ্রামের পাশের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //