গাইবান্ধায় ৯০০ কেজি চাল উদ্ধার, দোকান মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০টি খালি বস্তা ও ১৮টি সাধারণ বস্তায় থাকা ৯০০ কেজি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দোকান মালিকের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে দোকানের মালিক পলাতক রয়েছেন।

মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লেঙ্গাবাজারের ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার দোকান থেকে এসব চাল উদ্ধার করা হয়।

সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লেঙ্গাবাজারের ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার দোকানে সরকারি চাল বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুদ করা হয়েছে- এমন তথ্য গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রসূন কুমার চক্রবর্তীকে মোবাইলফোনে জানান স্থানীয়রা। পরে ইউএনও প্রসূন কুমার চক্রবর্তীর নির্দেশে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর থানার পুলিশসহ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ব্যবসায়ী রাজা মিয়াকে দোকানে ও বাড়িতে খোঁজ করে না পাওয়ায় স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দোকানের তালা ভাঙা হয়। 

এ সময় দোকানের ভেতরে ঢুকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি ওজনের ৩০টি খালি বস্তা পাওয়া যায়। এছাড়া পাশেই ৫০ কেজি ওজনের ১৮টি সাধারণ বস্তায় ৯০০ কেজি চাল পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাজার কমিটির সভাপতির জিম্মায় দোকানে তালাবন্ধ করে রেখে আসা হয় সেগুলো। এ বিষয়ে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোফাখখারুল ইসলামকে অবহিত করার পর মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে এসব খালি বস্তা ও চাল উদ্ধার করেন। পরে বিকেলে গাইবান্ধা সদর থানায় বাদী হয়ে রাজা মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। 

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ খালি বস্তার পাশেই সাধারণ ১৮টি বস্তা ভর্তি চাল পাওয়া গেছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে এগুলো সরকারেরই খাদ্যবান্ধব কোনো কর্মসূচির চাল হবে। যা বস্তা বদল করে রাখা হয়েছে মাত্র। 

সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, এসব চাল ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে বছরে ৫ বারের বা ভিজিএফ ও ভিজিডির যে কোনো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিরই হতে পারে। থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। 

কয়েকজন চাল ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কোনো ডিলার ৩০ জন কার্ডধারীর কাছে চাল বিক্রি না করে বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ভিজিএফ ও ভিজিডির ৩০ জন সুবিধাভোগীর কাছে চাল বিতরণ না করে সেগুলো রাজা মিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন। পরে সেই চাল দোকানে রাখার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা রাতেই ইউএনওকে জানান।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, এসব চাল খাদ্যবান্ধব বা অন্য কোনো কমসূচির কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা খোঁজ নিয়ে দেখেছি কোথাও থেকে কোনো চাল খোয়া যায়নি। যেহেতু ওই দোকান থেকে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির খালি বস্তা পাওয়া গেছে তাই একটি মামলা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //