পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী), বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সহধর্মীনি এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র মা শাহান আরা আবদুল্লাহর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (৮ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টা বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্থানে তার দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে সেখানেই দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে মৃত্যুর পরে ঢাকায় বিএসএমএমইউ’তে মরহুমার প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবার নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এদিকে বরিশালে দ্বিতীয় নামাজে জানাজায় মরহুমার স্বামী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী), বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, ছেলে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, মঈন আব্দল্লাহ, আশিক আব্দুল্লাহ, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার ইউনুসসহ আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য প্রচুর মানুষ জানাজা স্থলের দিকে যাত্রা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করোনার সংক্রমণ রোধে জানাজাস্থলের দিকে না যাওয়ার অনুরোধ জানান। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে জানাজা নামাজে গণজমায়েত ঠেকাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে মুসলিম গোরস্থান ও কালিবাড়ি রোডে সিটি মেয়র এর বাসভবন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এদিকে দাফনের আগে শহীদ জননী ও মুক্তিযোদ্ধা মরহুমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার প্রদান করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি চৌকস দল।
উল্লেখ্য রবিবার (৭ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় ঢাকার শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭২ বছর। তিনি স্বামী, ৩ ছেলে ও ১ কন্যাসহ নাতি-নাতনী এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী), আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ-এমপি’র সহধর্মীনি শাহান আরা বেগম ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ জননী।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সুকান্ত আব্দুল্লাহকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই রাতে ঢাকার ২৭ মিন্টো রোডে শ্বশুর বঙ্গবন্ধুর ভগ্নীপতি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসভবনে পরিবারের অন্যদের সাথে ছিলেন শাহান আরা আব্দুল্লাহ। তিনি ওই রাতের যেমন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, তেমনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিজেও আহত হয়েছিলেন।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগেরসহ-সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শাহান আরা বেগম একজন রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তার মৃত্যুতে বরিশাল মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আজ থেকে ৪ দিনের শোক কর্মসূচি পালন করবে। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কালোব্যাজ ধারণ, কোরআন খতমসহ বিস্তারিত শোক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা শাহান আরা বেগমের এ মৃত্যুতে বরিশালের জেলা প্রশাসন শোক জানিয়ে এক বার্তায় তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে, শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন।
এছাড়া শোক জানিয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক প্রকাশ করেছে বরিশাল প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল নিউজ এডিটরস কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh