লক্ষ্মীপুরে প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি

গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি আর মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর ফসলি জমি।

আজ শনিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনার জোয়ারের পানি ঢুকে নদীর তীর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে নদী সংযুক্ত খাল, পুকুর, বসতঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে আছে। এতে মেঘনা উপকূলীয় এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এদিকে, রায়পুর উপজেলায় কয়েকটি ঘেরের প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। পান পল্লিখ্যাত এ উপজেলার চর আবাবিলসহ কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৩ হাজার পানের বরজে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন পানচাষীরা।

বানভাসিরা জানায়, বেড়িবাঁধ নেই, জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে পুরো এলাকা। পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে রাস্তা। ঘরের ভিতরেই খাটের উপর মাচা দিয়ে কোনরকম আতঙ্কে রাত্রিযাপন করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, নতুন বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে বেশ কিছু কাঁচা, আধা পাকা ঘরবাড়ি ও সড়কসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা প্রদানে কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানালেন তিনি।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৯৭৬ সালে রামগতি, কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদরের একাংশে ৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রমত্তা মেঘনার অব্যাহত ভাঙন ও ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে সে বাঁধটির প্রায় ৩০ কিলোমিটার বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকেই বৃষ্টি আর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় এখানকার নি¤œাঞ্চল, ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়ে এখানকার বাসিন্দারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //