ফিরছে সোনলি আঁশের দিন

ফিরতে শুরু করেছে পাবনায় সোনালি আঁশের দিন।  এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।  বর্তমানে জেলার প্রতিটি এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা।

প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে কৃষকেরা। চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।

এবার পাবনায় সোনালি আঁশ খ্যাত পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাট চাষিদের দাবি- ন্যায্য দাম পেলে উৎসাহ আরও বাড়বে তাদের। এ বছর পাট আবাদের সময় প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও, পরবর্তীতে সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

প্রয়োজন মতো বৃষ্টি হওয়ায় পাট জাগ দিতেও তেমন বিড়ম্বনা পোহাতে হয়নি চাষীদের। তবে ভালো পানিতে পাট পঁচানোর জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে পরিবহনে করে পাট নিয়ে খাল-নদীতে জাগ দিতে হচ্ছে তাদের।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, চলতি বছর পাবনায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৪ হাজার ২শ ৫৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষাজাত ৪৩ হাজার ৪শ, দেশি ১৭৪ হেক্টর এবং মেছতা ৬৮০ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৪৪ হাজার ২শ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। তাদের মতে, লক্ষ্যমাত্রার শত ভাগ আবাদ হয়েছে।

পাবনায় গত বছর প্রতিমণ পাট বিক্রি হয়েছে ১৫’শ থেকে ১৬’শ টাকায়। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছিল ৮ থেকে ১১ মণ। পাবনার টেবুনিয়া, আটঘরিয়ার গোড়রী, সাঁথিয়ার, পুষ্পপাড়া ও আতাইকুলা হাটে গিয়ে দেখা যায়,  এ বছর মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২২’শ থেকে ২৩’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ।

এ বিষয়ে কয়েকজন পাটচাষীর সাথে আলাপকালে তারা বলেন, প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ৭ থেকে সর্বোচ্চ ১০ মণ। প্রতি বিঘা জমি চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক, পরিচর্যা, পচানি দিতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নেওয়ার পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে পাট ছিলা ও রোদে শুকিয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়।

গয়েশপুর গ্রামের কৃষক হেলাল জানান, আমি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। তবে ৩ বিঘাতে ভালো ফলন হলেও অন্য ২ বিঘাতে পানি থাকায় পাট বড় হতে পারে নাই। এতে ফলন একটু কম হয়েছে। তবে দাম ভালো পেয়ে কিছু হলেও লাভের মুখ দেখতে পেয়েছি। তাছাড়াও অনেক কৃষকেরা জানান, আঁশ তেমন মোটা না হওয়ায় ফলন একটু কম হয়েছে। যেখানে ১২ মণ হওয়ার কথা সেখানে ১০ মণ হয়েছে। তবে দাম ভালো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখতে পেয়েছি। বর্তমান বাজার অব্যাহত থাকলে আগামীতে আরও কৃষক পাট চাষে আগ্রহী হবে বলে তিনি আশাবাদী।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //