শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরি বন্ধ

লঞ্চ-স্পিডবোটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পারাপার

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে নাব্যতা সংকটে কারণে ফেরি চলাচল বন্ধের পঞ্চম দিন অতিবাহিত হলো সোমবার।

গত পাঁচদিন ধরে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার যাত্রী অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক যাত্রী গাড়িসহ ঘাট থেকে ফিরে যাচ্ছে। আবার অনেক যাত্রী গাড়ি রেখেই লঞ্চে বা স্পিডবোটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পারাপার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে। এসব নৌযানে পদ্মা পারাপারে আর্থিক খরচ বৃদ্ধি পেলেও লঞ্চ ও স্পিডবোটে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শিমুলিয়া ঘাটসহ উভয় ঘাটে আটকাপড়া পণ্যবাহী ট্রাক অর্থের অভাবে বিকল্প পথ পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না বলে চালক ও শ্রমিকরা জানিয়েছে।

দিনের পর দিন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক-হেলপাররা। তাই বাধ্য হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি সার্ভিস চালুর অপেক্ষার প্রহর গুনছে। এই পরিস্থিতিতে নাব্যতা সংকট নিরসনে বিআইডব্লিউটিএয়ের নয়টি ড্রেজার গত ৩ মাস ধরে ও পদ্মার সেতুর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ড্রেজার পলি অপসারণ করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের শক্তিশালী ড্রেজারটি ঠিকঠাক মতো চালু রেখে পলি অপসারণ কাজ অব্যাহত রাখলে আগামী তিনদিনের মধ্যে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করা যাবে।

তবে সেতু কর্তৃপক্ষের এরিয়া হচ্ছে, পদ্মা সেতুর দুপাশ মিলে পদ্মা নদীর আধা কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত। তারা শুধু খুঁটির নিচেই নাব্যতা সংকট নিরসন করতে পলি অপসারণ করছে। সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটির নিচ ও আশপাশ এলাকায় নাব্যতা সংকট নিরসনের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আর ১০ শতাংশ সোমবার রাতে অথবা মঙ্গলবার শেষ হয়ে যাবে। এরপরই ফেরি চলাচল উপযোগী হবে সেতু এলাকা।

তবে দুপাশে সেতুর আধা কিলোমিটার নদী সেতু কর্তৃপক্ষের অধিগ্রহণকৃত থাকলেও সেগুলো বিআইডব্লিউটিএর নাব্যতা সংকট নিরসনে ড্রেজিংয়ে বাধা নেই। সেতু কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনেই চ্যানেলে পানির গভীরতা নৌ চলাচলের উপযোগী রাখার দরকার। সেটা প্রয়োজন অনুযায়ী, পুরোটাতো নয়। তবে ফেরি বন্ধে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, চ্যানেল সংশ্লিষ্ট ২৬ নম্বর খুঁটি থেকে ২৪ নম্বর খুঁটি পর্যন্ত ৩০০ মিটার এলাকা ও আশপাশে এখন ১৮ ফুট গভীর করে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এরপরই ২৫ ফুট গভীর করে কেটে রাখা হবে। যাতে শীত মৌসুমেও সমস্যা না হয়। কারণ কয়েক দিনের মধ্যেই পানি আরো কমে যাবে। আর ড্রেজিং করা বালু ফেলা হচ্ছে বহু দূরের অধিগ্রহণকৃত ৩ নম্বর ব্লকে। এ বালু বা পলি এমনভাবে ফেলা হচ্ছে, বৃষ্টিতে বা অন্যকোনভাবে আর নদীতে আশার সুযোগ নেই।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান আরো জানান, পদ্মা সেতুর এলাকায় তাদের তিনটি ড্রেজার ড্রেজিং করছে। লৌহজং টার্নিং চ্যানেল প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা ১৫০ ফুট প্রশস্ত এবং ১৫/১৬ ফুট গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক মো. আতিকুজ্জামান বলেন, চ্যানেল চলাচল উপযোগী না থাকায় ফেরি চলতে পারছে না। এতে রাজস্ব ক্ষতি ছাড়াও দুর্ভোগ বাড়ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //