যমুনার ভাঙনে সর্বস্বান্ত হচ্ছে নদী পারের মানুষ

টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘর বাড়ি ভেঙে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন নদী পারের মানুষ। গত এক সপ্তাহে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তবুও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তবে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তা।

১৬ বছর আগে হালিমা বেগমের টাইফয়েড হলে টাকার অভাবে ঠিক মতো চিকিৎসা না করাতে পেরে দুটি চোখই অন্ধ হয়ে যায় তার। এর দুই বছরের মাথায় দিন মজুর স্বামীও হঠাৎ মারা যান। এরপর থেকেই দিন মজুর ছোট ভাইয়ের বাড়ির এক কোনে একটি ছোট কুঁড়ে ঘর তুলে বসবাস করছিলেন হালিমা। দিন মজুর ভাইয়ের সংসারের ছয়জন সদস্য। তিনি নিজেই ঠিকমতো চলতে পারেন না। তাই প্রতিবেশীদের দয়ায় খাবার জুটতো হালিমা বেগমের।

সম্প্রতি যমুনার তীব্র ভাঙনের কবলে পরে হালিমার ঘরটি। এক নিমিষে ঘরটি যমুনা গ্রাস করে নেয়। এ অবস্থায় অন্ধ হালিমা কোনো কুল পাচ্ছেন না। তার চোখে মুখে শুধুই হতাশার ছাপ। তিনি এখন কোথায় যাবেন, কী খাবেন? কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। যারা তাকে খাবার দিয়েছেন তাদেরও বাড়ি ঘর যমুনায় গ্রাস করেছে।

হালিমার মতো আরো শত শত মানুষের ঘর-বাড়ি মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের কবলে পরেছে। সব কিছু হারিয়ে অসহায় হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব মানুষ।


এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে একটানা নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, সময় মতো ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে হালিমার মতো শত শত মানুষ অসহায় হতেন না। শত বছরের পুরানো স্থাপনাগুলোও নদী গর্ভে বিলীন হত না। তাই দ্রুত স্থায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ভাঙন কবলিতদের।

এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই বন্যায় অসহায় মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এদিকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা ভাঙন রোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার প্রায় পাঁচটি গ্রামে প্রায় ছয় শতাধিক ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরো প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //