স্বামীকে মৃত দেখিয়ে একাধিক নারীর বিধবা ভাতা উত্তোলন

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নে জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে একাধিক নারীর বিধবা ভাতা উত্তোলন করেছেন। এ ব্যাপারে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে এ ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সরেজমিনে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছর (২০১৯/২০২০) উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ, ইউপি সদস্য ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন কর্মী আব্দুল জলিল নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তাদের পছন্দের লোকজনের নাম বিধবা ও স্বামী নিগৃতা (পরিত্যাক্তা) ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। 

ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ভাতা বিতরণ তালিকায় ক্রমিক নং (১৯) মাহফুজা আক্তার স্বামী মহব্বর আলী (৮৮), দৌলতন নেছা স্বামী আজিজার রহমান (৯৮), জোহরা খাতুন স্বামী কেরামত আলী, আলেয়া খাতুন স্বামী সহির আলী (১০৫), নুরনাহার খাতুন স্বামী মোজাম্মেল হক (১০৯), মাহিলা খাতুন স্বামী একরামুল হক (১১০) ও দেলেজান স্বামী নুরইসলামসহ আরো অনেক নারীর স্বামী বেঁচে আছেন। স্বামীর সাথে সংসার করে আসছেন এমন নারীর নাম বিধিবহির্ভুতভাবে চূড়ান্ত করে তালিকা প্রণয়ন করে ইত্যেমধ্যে ভাতা বিতরণ করেছে সংশ্লিষ্টরা। গত ৪ অক্টোবর সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি সকলের নজরে আসে।

স্বামী জীবিত থাকতে বিধবা ভাতার টাকা উত্তোলন করার কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুবিধাভোগী অনেকে বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা আমাদের কাছ থেকে ভোটার কার্ড ও টাকা নিয়ে বিধবা ভাতা করে দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন কর্মী আব্দুল জলিলের সহযোগিতায়, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা এমন অনিয়ম করেছেন। এ ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইউপি সদস্যরা বলছেন, যাদের স্বামী জীবিত আছে তাদের নাম চেয়ারম্যান দিয়েছে। আর ইউপি চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, ইউপি সদস্যরা আমাকে তালিকা দিয়েছে আমি বিশ্বাস করে স্বাক্ষর করে দিয়েছি। আবার সমাজসেবা অধিদপ্তর এর ইউনিয়ন কর্মী আব্দুল জলিল বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে তালিকা দিয়েছে তাই আমি যাচাই না করে অফিসে জমা দিয়েছি। তবে কেন যাচাই করেননি এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দেয়নি আব্দুল জলিল। 

তবে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মাহাবুবুল আলম অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যাদের স্বামী আছে তাদের নাম কর্তন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা উপজেলার নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন বলেন, জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা করে দেয়ার বিষয়ে তদন্ত চলছে,  দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : লালমনিরহাট

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //