আগাম ফুলকপি চাষে লাভবান ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও অত্যন্ত পছন্দের সবজি শীতকালীন ফুলকপি। আর এই ফুলকপির আগাম চাষ করে লাভবান হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক জাকির হোসেন। আগাম জাতের এই ফুলকপি বিক্রি করে তিনি এখন ভালো দাম পাচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় উপজেলার অন্য কৃষকেরাও আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও বিমানঘাঁটি এলাকার কৃষক জাকির বলেন, ধান-গম চাষ করে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারিনি, লোকসান গুনতে হয়। তাই ফুলকপি চাষ করছি। শীতকালে ফুলকপির ভরা মৌসুমে দাম একটু কম হয়। তবে অন্য সময়ে বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই আমরা সারা বছরই এখন ফুলকপি চাষ করছি। 

তিনি আরো বলেন, এ বছর আমি আমার দুই বিঘা জমিতে আগাম লিডার জাতের ফুলকপির চাষ করেছি।

জাকির হোসেনের প্রতি বিঘায় প্রায় ৬ হাজারের মতো ফুলকপি গাছ রয়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, বাজারে এখন যে দাম রয়েছে, তাতে আমি বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পাবো।

আরেক কৃষক আসাদুল হক বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় ফুলকপি চাষ অধিক লাভজনক। আমি দেড় বিঘা জমিতে আগাম ফুলকপি চাষ করেছি। জমি থেকেই পাইকারি ক্রেতারা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি করে ফুলকপি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় এক বিঘা জমিতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।

কৃষক সিদ্দিক আলী জানান, এর আগে দেখা যেত শীতকালে জমিতে ফুলকপির চাষ হতো। সে সময় ভালো দাম পাওয়া যেত না। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা এখন সারা বছর ফুলকপির চাষ করি। এখানকার ফুলকপি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে রফতানি করা হয়। এছাড়া স্থানীয় হাটবাজার ও ঠাকুরগাঁও শহরেও বিক্রি করি। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজের তুলনায় অধিক লাভ এই আগাম ফুলকপিতে। তাই এই ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের মানুষ এখন ফুলকপি চাষে ঝুঁকছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই অঞ্চলের মানুষ আধুনিক চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। চাষিরা আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। ফলে তারা ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন। 

সাধারণত শীতকালেই আগাম, মধ্যম ও নাবী মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফুলকপি আবাদ করা যায়। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালেও চাষের উপযোগী জাত রয়েছে।