সুনামগঞ্জ
জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১১:০০ এএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১১:০১ এএম
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১১:০০ এএম
সুনামগঞ্জ
জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ১১:০১ এএম
নৌকা, কোদাল, ব্যালচা আর জাল নিয়ে যাদুকাটা নদীর তলদেশের বালু থেকে কয়লা আলাদা করেছে হাজার হাজার শ্রমজীবী শিশু, যুবক, নারী ও পুরুষ।
এ নদী থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়লা সংগ্রহ করেন শ্রমিকরা। একজন শ্রমিক প্রতিদিন তিন থেকে চার বস্তা কয়লা সংগ্রহ করতে পারে, যার স্থানীয় বাজার দর এক থেকে দেড় হাজার টাকা। আর এগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে সংসার চালায় যাদুকাটা নদীর পাড়ের শ্রমজীবী মানুষ।
এমন চিত্র দেখা গেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের যাদুকাটা নদীর বারিকটিলা এলাকা থেকে ঢালারপাড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায়।
এ নদীতে ঢলের পানিতে ভেসে আসা কয়লা কুড়িয়ে নদী তীরবর্তী মাহারাম, বড়গোপ, লাউড়েরগড়, ঢালারপাড়, বিন্নাকুলি, ঘাগড়া, মাটিকাটা, মানিগাঁও, লাকমা, সুন্দরপাহাড়ি, রাজাই চাঁনপুরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তবে এই নদী সংশ্লিষ্ট আরো হাজার হাজার শ্রমিক বালু ও পাথর উত্তোলনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেকার সময় পার করছে।
পারভীন খাতুন নামে এক শ্রমিক বলেন, গত নয়মাস ধরে করোনাভাইরাসের কারণে কোনো কাজ নাই। এর মধ্যে কয়েক দফা বন্যায় চরম দুর্ভোগে ছিলাম। যাদুকাটা নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে গুড়া কয়লা ভেসে আসায় খুব সকালে খাবার খেয়ে নৌকা, জাল, ব্যালচা ও কোদালসহ নদীতে চলে আসি। এখান থেকে কয়লা তুলে তা বিক্রি করে কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।
শুধু তিনি নন এই নদীর পাড়ের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এখন এই কাজ করছেন। কয়লা উত্তোলনের আগে তাদের দিন অনেক কষ্টে কেটেছে। এখন কাজের সুযোগ পাওয়ায় পরিবারের অভাব কিছুটা কেটেছে বলেও জানান এই নারী শ্রমিক।
প্রতিদিন একজন নারী এক হাজার টাকা ও একজন পুরুষ দেড় হাজার টাকার কয়লা সংগ্রহ করতে পারে। আর শ্রমিকদের সংগ্রহ করা কয়লা কিনে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন বলে জানান ব্যবসায়ী জোসেফ মিয়া। তিনি বলেন, নদী থেকে কয়লা উত্তোলন করার ফলে ব্যবসায়ী-শ্রমিক উভয়ের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. নিজাম উদ্দিন জানান, করোনার পর এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছিল। যাদুকাটা নদীতে কয়লা উত্তোলন করার ফলে ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেও এই নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলন করতে না পারায় অনেক বালু পাথর উত্তোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা কাজ করতে না পেরে ও ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগে আছে।
সুনামগঞ্জ প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, যাদুকাটা নদীতে ভেঁসে আসা কয়লা তুলে শ্রমজীবী পরিবারের মানুষ বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকা নির্বাহ করছে। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা রোধে ও শৃংখলভাবে কাজ করতে পারে সেদিকে নজর রাখছে প্রশাসন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : সুনামগঞ্জ যাদুকাটা নদী কয়লা জীবন-জীবিকা
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh