অতিরিক্ত আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু: ভিসেরা রিপোর্ট

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ মারা যাওয়া রায়হান আহমদের ভিসেরা রিপোর্টে বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্তের ভিসেরা রিপোর্ট ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে আমাদের কাছে এসেছে। এতে বিষক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই কর্মকর্তাদের কাছে এই রিপোর্ট হস্তান্তর করা হয়েছে।’

গত ১১ অক্টোবর সকালে মারা যান নগরীর আখালিয়া বাসিন্দা রায়হান আহমদ (৩৪)। এর আগের রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই রাতেই হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তামান্না আক্তার।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ১১ অক্টোবর রায়হানের লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রায়হানের শরীরে শতাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। ভিসেরা রিপোর্টেও তার সত্যতা পাওয়া গেছে।

তবে হেফাজতে মৃত্যু আইন অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশনা থকলেও প্রথম দফায় তা মানা হয়নি। পরে ১৫ অক্টোবর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফায় আবারো রায়হানের ময়নাতদন্ত করা হয়।

হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। পরে ওই ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যান বন্দরবাজার থানার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা আকবর হোসেন ভূইয়া।

গত ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আকবর হোসেন ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতে পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ দাবি করে।

আকবর পালানোর পর থেকেই তাকে পালাতে কারা সহযোগিতা করেছেন তাদের চিহ্নিত করার দাবি ওঠে। আটকের পর আকবরও জনতার কাছে দুই সিনিয়র কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি পালিয়ে যান বলে জানান। তাকে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে ইতোমধ্যে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে।

গ্রেফতারের পর আকবরকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রিমান্ড শেষে ১৭ নভেম্বর আকবরকে আদালতে হাজির করা হলেও তিনি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেননি।

এর আগে এই ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য এএসআই আশেক এলাহি, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস এবং হারুনুর রশীদকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পিবিআই। তবে রিমান্ড শেষে তারাও আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেননি। -ইউএনবি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : সিলেট

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //