দুর্গম পাহাড়েও উষ্ণতা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা তরুণদের

রাঙামাটি জেলা সদর হতে পানি পথে ৬০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা বরকল। রাঙামাটির সীমান্তবর্তী এই উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে বসবাসরতদের মাঝেও উষ্ণতা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে একদল তরুণ-তরুণী। 

‘মৈত্রী পরিষদ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে তারা তীব্র ঠাণ্ডায় কাবু শীর্তাত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে উপহারস্বরূপ কম্বল বিতরণের মধ্য দিয়ে। পানিবেষ্ঠিত রাঙামাটির বরকল উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। নৌ-পথই এই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম।

গতকাল শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বরকল উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড দেওয়ানচর এলাকায় বনভান্তের স্মৃতি মন্দির প্রাঙ্গণে আশপাশের অর্থশতাধিক পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তারা। এসময় তাদের এই কর্মসূচিতে সহায়তা করেছেন দেওয়ানচর বনভান্তের স্মৃতি মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পূর্ণমঙ্গল চাকমা, স্থানীয় ইউপি সদস্য শান্তি প্রিয় চাকমা, পাড়া কার্বারি কনক বরণ চাকমা। সাথে ছিলেন মৈত্রী পরিষদের সভাপতি সুজন বড়ুয়া, সদস্য সুব্রত বড়ুয়া, প্রণব বড়ুয়া, সুস্মিতা বড়ুয়া, শান্তনু বড়ুয়াসহ আরো অনেকেই।

পাহাড়ি জনপদের দুর্গম পাহাড়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এমন কর্মসূচি গ্রহণ করায় উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রাও। স্থানীয় ইউপি সদস্য শান্তি প্রিয় চাকমা ও পাড়াকার্বারি (গ্রাম প্রধান) কনক বরণ চাকমা জানান, সারাদেশের মতো পাহাড়েও জেঁকে বসেছে শীত। পাহাড়ি এলাকার গ্রামের মানুষ অত্যন্ত সহজ-সরল ও গরীব। শহুরে এলাকার বিত্তশালীদের মতো তাদের ভালো অবস্থা নেই যথেষ্ট প্রয়োজনীয় গরম কাপড় কেনার। সমতলের এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গরীবের শীত নিভারণে এগিয়ে আসলেও পাহাড়ে তেমন কেউ আসে না। মৈত্রী পরিষদ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সেটি অত্র এলাকার মানুষ মনে রাখবে।


মৈত্রী পরিষদের সভাপতি সুজন বড়ুয়া জানিয়েছেন, আমাদের সংগঠনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যই হলো দুস্থ-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমরা লক্ষ্য করে দেখলাম শহরের আশপাশে গ্রামে বিভিন্ন সময়ে নানান সহায়তা পৌঁছালেও দূরের এই দুর্গম এলাকায় পৌঁছায় না। তাই আমরা উদ্যোগ নিই কিছুটা দূরের পথ হলেও রাঙামাটির সীমান্তবর্তী এই উপজেলার কিছু সংখ্যক মানুষের পাশে দাঁড়াব। আমাদের লক্ষ্য রয়েছে, সামনের আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করার।

সংগঠনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সুপ্রিয় বড়ুয়া রাজীব জানান, আমাদের অবস্থান সব সময়ই মানুষের পাশে। আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে প্রাণান্ত চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। আমরা বিশ্বাস করি, একদিন পৃথিবীটা মানুষের হবে জাতি, ধর্ম, বর্ণের উর্ধ্বে ওঠে। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে নানাভাবে সেই স্বপ্নই আমরা দেখি।

এদিন সকাল ৯টায় রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমি ঘাট হতে রওনা হওয়া ইঞ্চিনচালিত বোট ওই এলাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //