সাটুরিয়ায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দপ্তরকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। 

গত সপ্তাহে মামলা হলেও গতকাল সোমবার (১৯ জানুয়ারি) বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই নারী পেশায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। সেই সুবাদে উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন ওই ওষুধের ফার্মেসিতে সময়ে অসময়ে আসা যাওয়া করতো। মাঝে মধ্যেই ইশারা ইঙ্গিত করে অশ্লীল কথাবার্তা বলতো। এরইমধ্যে একদিন ওই নারীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করে চেয়ারম্যান। গৃহবধূর ধর্ষণের ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন চেয়ারম্যানের ভাগনে আশিকুর রহমান ওরফে রাশেদুল ইসলাম। আশিক চেয়ারম্যানের ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ ওই গৃহবধূকে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করে।

ওই গৃহবধূ বলেন, আশিকুর আমাকে চেয়ারম্যান ও আমার নগ্ন ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিছুদিন আগে কক্সবাজার নিয়ে একটি হোটেলে আটকে রেখে তিনদিন ধর্ষণ করে। এরপরও সে হুমকির ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও অনেকবার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আশিকুর কক্সবাজারে ধর্ষণের সময় গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করে। কক্সবাজার থেকে ফেরার পর আশিকুর বরাইদ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা সাইদ, স্থানীয় সাংবাদিক আবদুল সালাম সফিক ও রিপনের মোবাইল ফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ছড়িয়ে দেয়। এদের মোবাইল ফোনে ওই দৃশ্য দেখিয়ে এই চক্র আরো এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। 

গৃহবধূর অভিযোগ, টাকা নেয়ার পরও সাংবাদিক আব্দুল সালাম সফিক গৃহবধূকে অনৈতিক প্রস্তব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেন সাংবাদিক শফিক।

পরে বাদী এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে আসামিরা ওই গৃহবধুকে হুমকি ধামকি দিয়ে জানে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। 

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান হারুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ধর্ষণ করিনি, আমার ভাগ্নে আসিফুর রহমান ধর্ষণ করেছে। মেয়েটিকে এলাকা ছাড়া করার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, মেয়েটি খারাপ তাই সালিশের মাধ্যমে আমি তাকে এলাকা ছাড়া করেছি।

মামলার বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, পিবিআইয়ের একটি টিম ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মাঠে কাজ শুরু করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //