কিশোরগঞ্জে হত্যার দায়ে প্রেমিকাসহ ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় চাঞ্চল্যকর নবী হোসেন হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক দণ্ডও দেয়া হয়। 

আজ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১’র বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নবী হোসেনের সাবেক প্রেমিকা সুমনা বেগম ওরফে শিলা (৩০) ও সুমনার সাবেক স্বামী নজরুল ইসলাম (৩৮)।

এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি আশরাফুল রাসেল ও মো. শরীফ মিয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সুমনা পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার অন্য তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, নজরুলের সাথে সুমনার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তাদের দুইজনের বিয়ে হলেও ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কবিরাজ নবী হোসেনের সাথে সুমনা সম্পর্ক গড়ে তুলে। সুমনা শহরের চন্ডিবেড় দক্ষিণপাড়া মহল্লায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। কিন্তু আবার নজরুলের সাথে সুমনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ নিয়ে নবী হোসেনের সাথে সুমনার সম্পর্কের অবনতি হয়। 

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর রাতে ভাড়া বাসায় নবী হোসেনকে সুমনা ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এদিনই গভীর রাতে সুমনার বাসায় নবী হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরে লাশ ৬ টুকরা করে ভৈরবের কয়েকটি স্থানে ফেলে রাখা হয়। ঘটনার দুইদিন পর ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ নিহতের মৃতদেহের একাংশ উদ্ধার করে। ২৫ ডিসেম্বর মৃতদেহের বাকি অংশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া একাংশ নবী হোসেনের বলে শনাক্ত করে তার স্ত্রী বিলকিছ বেগম। 

ওইদিনই বিলকিস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নজরুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরে একে একে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও এর সাথে জড়িতদের নাম জানতে পারে। এক সময় মামলাটির তদন্তে নামে সিআইডি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের এসআই মো. নজরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি চারজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবু সাঈদ ইমাম বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।

তবে রায়ে সন্তুষ্ট নয় আসামি পক্ষ। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //