চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা সন্ত্রাসীদের

পাবনায় দাবি করা চাঁদার টাকা না পাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আজ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের চরসদিরাজপুরে। 

এসময় সন্ত্রাসীরা নদীর পাড়ের দুইটি দোকান, ঘাটে বেধে রাখা দুইটি নৌকা ও একটি স্পিডবোট আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও দোকানে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। 

হামলায় আহত হয়েছে চারজন। তারা হলেন- নাইটগার্ড ফরজ প্রামানিক, নৌকার মালিক নুরুল ইসলাম, দোকান মালিক শামীম মন্ডল ও বকুল মন্ডল। তাদের মধ্যে নুরুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, হামলার সময় কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। দোকানে অবস্থানরত ব্যবসায়ী ও নৌকার মাঝিকে মারধর করে ছিনিয়ে নেয়া হয় নগদ অর্থ। লুট করা হয় দোকানের মালামাল। 

স্পিডবোট ব্যবসায়ী বাবু শেখ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদের লোকজন চর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, ঘুরতে আসা পর্যটকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে তারা। কিছুদিন আগে তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রফিক খাঁ, হোসেন আলী, আমজাদ শেখ, নাসির, রবি শেখসহ ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ধারালো অস্ত্রে সজ্জিতো হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। 

তিনি বলেন, এসময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়। এই হামলায় আমাদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, আমি লোক পারাপারের জন্য একটি স্পিডবোট ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসছি। এই স্পিডবোটের আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। সন্ত্রাসীরা আয়ের একমাত্র উৎস বোটটি পুড়িয়ে দেয়ায় আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি বোট পুড়ে যাওয়ায় বোটের মূল্য পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছে মালিক। আমি এখন কি করে এই অর্থ পরিশোধ করবো। 

আহত নুরুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসীদের হামলায় আমার নৌকাটি পুড়ে গেছে। এ সময় তারা আমাকে মারধরও করে। বর্তমানে আমি আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। 

শামীম মন্ডল জানান, সন্ত্রাসীরা দোকানের মালামাল লুট করার পর দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আমার প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তবে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ। তিনি বলেন, একটি মহল রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন অভিযোগ করেছে। অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। 

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, হামলার বিষয়ে কিছু জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //