নৌশ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার, বরিশাল থেকে ছেড়েছে ৭ লঞ্চ

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর পরই বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে সাতটি লঞ্চ। এর মধ্যে বরিশাল নদীবন্দর থেকে ছেড়ে গেছে পাঁচটি ও বাকি দুটি লঞ্চ বরগুনা ভায়া বরিশাল হয়ে ছেড়ে যায়।

গতকাল সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১০টা থেকে একে একে লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক এবং নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, মাঝ নদীতে দুর্ঘটনার ঘটনায় মেরিন কোর্টে অ্যাডভেঞ্চার-১ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় লঞ্চ দুটির দুইজন মাস্টারসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। সোমবার সকালে ওই মামলার দুই আসামি মাস্টার জামাল হোসেন ও রুহুল আমিন ঢাকা মেরিন কোর্টে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় বিচারক তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন শুরু করে বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ শ্রমিকরা। তারা দুপুরেই বরিশাল নদী বন্দর থেকে লঞ্চ সরিয়ে কীর্তনখোলার মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখে।

এর ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কয়েক হাজার যাত্রীদের। খবর পেয়ে রাতে নদীবন্দরে ছুটে যান বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি নদী বন্দরে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে প্রথম একটি লঞ্চ ছাড়ার ব্যবস্থা করেন।

কিন্তু তার মধ্যেই ঢাকায় আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের সাথে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে মাঝ নদীতে নোঙর করা লঞ্চগুলো বরিশাল নদীবন্দরে রাখা হয়।

পরে যাত্রী তুলে একে একে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে বিলম্বে লঞ্চ ছাড়ার কারণে অধিকাংশ যাত্রী বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা ও বাড়ি ফিরে যাওয়ায় লঞ্চে যাত্রীর চাপ কম ছিল।

বাংলাদেশ যাত্রীবাহী নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাস্টার আবুল হাসেম জানান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমরা বরিশাল থেকে লঞ্চ ছাড়ার ব্যবস্থা করেছি।

অপরদিকে বরিশাল নদীবন্দরের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কারণে রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে পারাবত-৯, সুরভী-৮, সুন্দরবন-১০, অ্যাডভেঞ্চার-১ ও মানামী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এছাড়া ভায়া রুটের এমভি পূবালী-৭ ও সাহরুখ-২ বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যায়।

এর মধ্যে রাত সোয়া ১০টার দিকে এমভি মানামী ও এমভি সুন্দরবন-১০ ছেড়ে যায়। এর আগে এমভি পূবালী-৭ রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছেড়ে গেছে। তবে কর্মবিরতির কথা শুনে অনেক যাত্রী ঘাট থেকে চলে গেছে। যে কারণে সাতটি লঞ্চ বরিশাল থেকে ছেড়ে গেলেও যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কম ছিল।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //