ফুলকপির বীজ কিনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের কৃষকরা এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের হোয়াইট স্টোন জাতের ফুলকপির বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন। ভুক্তভোগী কৃষকরা দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসে উপস্থিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করলে সেটা তদন্ত হয়। লক্ষ্মীপুর ব্লক সুপারভাইজার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বজলুর রহমান সরেজমিনে তদন্ত করে বিষটির সত্যতা পায়। তিনি চলতি মাসের ১০ তারিখ দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ১৫ জন কৃষকের ৬ দশমিক ৬৬ একর জমিতে বপন করা হোয়াইট স্টোন জাতের ফুলকপি নষ্ট হয়ে গেছে, যার মূল্য ৮ লাখ টাকা; কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বীজ কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের ১৫ জন কৃষক ফুলকপি লাগানোর জন্য পার্শ্ববর্তী জেলা মেহেরপুর বড় বাজারে অবস্থিত আল্লার দান বীজ ভাণ্ডারে বীজ কিনতে যান। এ সময় আল্লার দান বীজ ভাণ্ডারের পরিচালক দয়াল রানা কৃষকদের এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের হোয়াইট স্টোন জাতের বীজ কিনতে উৎসাহী করেন। এ সময় কৃষকরা তার কথা মতো সেখান থেকে ৫৫০ টাকা দরে ১৪০ প্যাকেট ফুলকপির বীজ কেনেন। কৃষকরা তাদের জমিতে বীজ বপন করলে ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ফুলকপির গুটি দেখা দেয়। বীজের চারাগুলোতে ফুলকপির ওজন হয় ৫০-১০০ গ্রাম। অথচ ৬০ দিন পর চারা রোপণ করার কথা থাকলেও ওই বীজের চারা ৩০-৪০ দিন পরই কপি বেরিয়ে যায়। ফলন না হওয়ায় কৃষকরা তাদের জমি থেকে কপি গাছ কেটে ফেলে। ভুক্তভোগী কৃষকরা যেখান থেকে কপির বীজ কিনে সমস্যায় পড়েন, সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালককে মোবাইল ফোন করে বিষয়টি জানালে তিনি তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। প্রতিকার না পেয়ে কপির চারা নিয়ে তারা দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসে আসে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষক সংগঠনের সভাপতি শামসুল আলম জানান, দামুড়হুদার মজলিশ গ্রামের প্রায় ১৫ জন কৃষক এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের বীজ কিনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে করে ভুক্তভোগী কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ডেভেলপমেন্ট) আব্দুল হালিম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ ব্যাপারে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের হোয়াইট স্টোন জাতের ফুলকপির বীজ কিনে তা বপন করে ফলন হয়নি। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করিয়েছি। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ আর মালিক সিড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মরত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা অফিসে এসে বিষয়টি সুরাহার জন্য সময় চেয়ে গেছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : চুয়াডাঙ্গা

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //