রুগ্নদশায় শেরেবাংলা মেডিকেলের এনাটমি জাদুঘর

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের (শেবামেক) একমাত্র মিউজিয়ামটি (জাদুঘর) আজ রুগ্ন দশায় পতিত হয়েছে। এক সময় এ মিউজিয়ামে মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে সাজানো ছিলো। আজ তা কেবলই স্মৃতি।

পরে আছে শুধু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রদর্শনের গ্লাস যুক্ত বহুকালের পুরনো সোকেজ, ঝার, সার্কুলার গ্লাস আর বিভিন্ন ধরনের মডেলগুলো। বহুকালের পুরনো মানবদেহের ব্রেন, হার্ট, লাঞ্চ, লিভার, স্টোমাক, কিডনি, লার্জিং স্টাইন, ওভারি, পেনিসসহ কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, ‘অযত্ন-অবহেলা আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নের এই এনাটামি মিউজিয়ামটি আজ জৌলস হারিয়ে রুগ্ন দশায় পতিত হয়েছে। এর পেছনে কলেজ এবং গণপূর্ত বিভাগের উদাসীনতার পাশাপাশি ঠিকাদারের অনিয়মকেও দায়ি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজটি প্রতিষ্ঠার সময় এ বিভাগের অধীনে একটি মিউজিয়াম চালু করা হয়। বিভাগটিতে প্রতিদিন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি ব্যবহারিক কাজ করানো হয়ে থাকে।

এ বিভাগের দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন, ‘বিভাগটিতে প্রতিষ্ঠালগ্নে যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং মানবদেহ সংযোজন করা হয়েছিল, যা প্রতিষ্ঠার এক যুগের মধ্যেই ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায়। বর্তমানে অর্ধশত বছর পার করেছে মেডিকেল কলেজ; কিন্তু অ্যানাটমি বিভাগের মিউজিয়ামে নতুন করে কোনো মরদেহ, কঙ্কাল বা মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যুক্ত হয়নি।

তারা আরো বলেন, এই বিভাগটির এখন আধুনিকায়ন জরুরি। প্রতি বছর শেবামেকের আধুনিকায়ন, সংস্কার এবং উন্নয়নখাতে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু মিউজিয়ামটির আধুনিকায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তবে উন্নয়ন এবং সংকট নিরসনে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়েছেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস.এম সারওয়ার।

তিনি বলেন, মিউজিয়ামটি প্রতিষ্ঠার পরে এখানে প্রদর্শনের জন্য ইংল্যান্ড থেকে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উপহার আসে। সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোই এখনো রয়েছে। তাছাড়া কেউ মৃতদেহ স্বেচ্ছায় দান না করায় নতুন মৃতদেহ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।

মিউজিয়ামের আধুনিকায়নে কর্তৃপক্ষ একমত দাবি করে কলেজ অধ্যক্ষ বলেন, এটি আধুনিকায়ন বা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তারা যেভাবে চাহিদা দিবে আমরা সেভাবেই মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠাব। পাশাপাশি এর উন্নয়নে যতটুকু সম্ভব করা হবে বলেও জানান অধ্যক্ষ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //