স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গণধোলাই

বগুড়ার ধুনটে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি পদে চাকরি দেয়ার নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সেলিম রেজা (৩০)। টাকা ফেরত না দিয়ে হুমকি দেয়ায় বিক্ষুব্ধ জনতা সেলিম রেজাকে গণধোলাই দিয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের কোনাগাঁতি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেলিম রেজা ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের মহিশুরা উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সানোয়ার হোসেন টুনুর ছেলে। তিনি গোপালনগর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার। তিনি গত ২০১৭ সালে কোনাগাঁতি গ্রামের দরিদ্র কৃষক জসিম উদ্দিনের ছেলে শামীম রেজাকে কোনাগাঁতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি পদে চাকরির প্রলোভন দেন। চাকরির বিনিময়ে তার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। সেলিম রেজা ওই পদে চাকরি দেয়ার নামে আরো চারজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন। পরে পাঁচজনের মধ্যে একজনকে বেশি অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়া হয়।

সেলিম রেজা টাকাগুলো উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাই খোকনের পক্ষে নেন। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হাই খোকনের বিরুদ্ধে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ২০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দফতরি নিয়োগের নামে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।

গত ৪ মার্চ শামীম রেজার বড়ভাই আবদুল হাই ধুনট থানায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হাই খোকন ও সেলিম রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। প্রতারণার শিকারদের পক্ষে থানায় পাঁচটি অভিযোগ দেয়া হয়; পুলিশ সেসব রেকর্ড করেনি। থানায় অভিযোগ দেয়ার পর থেকে সেলিম রেজা বাদীর পরিবারকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে আসছেন।

এদিকে ১০ মার্চ বুধবার সন্ধ্যার দিকে সেলিম রেজা ও তার লোকজন কোনাগাঁতি গ্রামে প্রতারণার শিকার শামীম রেজার ভাই আবদুল হাইকে একা পেয়ে মারধর করেন। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ দেন। রাজি না হলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সেলিম রেজা ও তার লোকজন চাকরি প্রার্থী শামীম রেজা ও তার ভাই আবদুল হাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

টের পেয়ে গ্রামবাসী ধাওয়া করে সেলিম রেজাকে আটক করেন। এরপর তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে চেয়ারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারপিট করেন। খবর পেয়ে ধুনট থানা পুলিশ জনরোষ থেকে বাঁচাতে সেলিম রেজাকে থানায় নিয়ে আসেন। রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার সেলিম রেজা বলেন, তিনি চাকরি দেয়ার নামে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। কিছু টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট টাকার ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শামীম রেজা ও তার ভাই আবদুল হাই তাকে তুলে নিয়ে বেঁধে রেখে মারপিট করেছেন।

ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা জানান, টাকা পেলেই কাউকে বেঁধে রেখে মারপিট করার অধিকার নেই। বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন সেলিম রেজা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //