গাজীপুরে কাউন্সিলর পুত্রের হাতে পুলিশ দম্পতি লাঞ্ছিত

গাজীপুরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে কাউন্সিলর পুত্রের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক পুলিশ দম্পতি। 

রবিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় ওই হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সিফাত (২০) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদের ছেলে। 

লাঞ্ছিত পুলিশ সদস্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার কর্মরত কনস্টেবল রিপন (৩৪) । এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত সিফাত আহমেদকে (২০) আটক করে টঙ্গী পূর্ব থানায় নিয়ে যায়। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে থানা থেকে কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ তার ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন পুলিশ কনস্টেবল রিপন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালের তৃতীয় তলার বারান্দায় প্রতিবেদনের জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন ওই পুলিশ দম্পতি। পাশেই চলছিলো কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম। সেখানে হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নকর্মীর সাথে জুতা খুলে প্রবেশ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয় পুলিশ দম্পতির। 

এসময় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কর্মরত কাউন্সিলরের শ্যালিকা সাদিয়া সুলতানার সাথে বাকবিতণ্ডা হয় পুলিশ দম্পতির। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদের স্ত্রী শিউলি বেগম (৪০), কাউন্সিলর পুত্র সিফাত আহমেদ ও শ্যালিকা সাদিয়া সুলতানা ওই পুলিশ দম্পতিকে লাঞ্ছিত করেন। কাউন্সিলর পুত্র সিফাত পুলিশ কনস্টেবল রিপনের পরিহিত গেঞ্জিটি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি জানতে পেরে উভয় পক্ষকে তার কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুলহাস উদ্দিন অভিযুক্ত সিফাতকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।


পুলিশ কনস্টেবল রিপন বলেন, জুতা খুলে প্রবেশ না করায় আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকলে আমি আমার পরিচয় দেই। পরিচয় পাওয়ার পরও আমাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

গাজীপুর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তর্কবিতর্কের জেরে পুলিশ সদস্যের সাথে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক কাউন্সিলর পুত্রের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় বিষয়টি সমাধান করেছেন বলে শুনেছি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ বলেন, আমার ছেলে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পুলিশ দম্পতির সাথে একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। পরে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ বলেন, পুলিশ সদস্যের লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সামান্য বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //