তরমুজের বাম্পার ফলন সত্ত্বেও দুশ্চিন্তায় কৃষক

যেমন আশা করেছিলেন, তেমন ফলনেই পেয়েছেন বরগুনার তরমুজচাষিরা। বিক্রির জন্য এরই মধ্যে ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলছেন তারা; কিন্তু পাইকার ও ক্রেতার দেখা নেই। বিক্রির ভরা মৌসুমে করোনা মহামারির কারণে বাজারের এ অবস্থা। স্থানীয় কিছু পাইকার তরমুজ কিনলেও পরিবহন সংকট রয়েছে চরমে। আর এতেই বিপাকে পড়েছেন তরমুজ চাষিরা। যারা ঋণ নিয়ে তরমুজের আবাদ করেছেন তাদের অবস্থা আরও করুন। তরমুজ চাষিরা দাবি করেছেন, সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় তরমুজ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হলে বেঁচে যান তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে বরগুনা জেলায় চার হাজার ৪৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে গেন্ডারী, টকটেন, ড্রাগন, কালো জাম্বুজাগুয়ার, ওয়ার্ল্ড কুইনসহ বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। 

এবারও সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নে; কিন্তু কৃষকরা জানান, গত বছরের লোকসান কাটাতে এ বছর বরগুনায় তরমুজের আবাদ বেশি হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর তরমুজচাষিরা লাভের আশা করছিলেন; কিন্তু লকডাউনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতা না আশায় বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন তারা। 

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বরগুনার তরমুজ বিক্রি হয়ে থাকে। 

এ ছাড়াও এ অঞ্চলের তরমুজ গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গাইবান্ধা টাঙ্গাইলেও বিক্রি হয়; কিন্তু এ বছরও ঠিক বিক্রির সময়ে করোনার কারণে ওইসব এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন না। ফলে তরমুজ বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। পচনশীল এই কৃষিপণ্য যথাসময়ে বিক্রি না করতে পারলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষকদের আতঙ্কিত, এবারও ক্রেতার লোকসান গুনতে হবে তাদের। 

বরগুনা সদর উপেজলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের কয়েকজন তরমুজ চাষি জানান, রবি মৌসুমে তারা স্থানীয় আড়তদার, বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ চাষ করে থাকেন। 

লতাকাটা এলাকার মন্টু মিয়া বলেন, গত বছরও একই সময়ে করোনার প্রকোপে পাইকার আসেনি। ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে বেশিরভাগ তরমুজ। এ বছরও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার আমাদের তরমুজ বিক্রির ব্যবস্থা করুক। নয়তো আমরা বড় লোকসানের মুখে পড়ব।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাজার অনুসন্ধানকারী টি এম মাহবুবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তরমুজ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আমরা ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তরমুজ চাষি ও স্থানীয় ব্যবসায়ী আড়তদাররা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের তরমুজ পরিবহনের ব্যাপারে সহায়তা দেবো। তরমুজ পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনও প্রকার বাধার সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যাপারে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের মাধ্যমে বিশেষ ছাড় দেওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //