নদ-নদী শুকিয়ে গেছে- হুমকিতে জীব-বৈচিত্র্য

প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার সংকোষসহ ১৬টি নদ-নদী। এসব নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর ও দ্বীপচর। এতে করে নদীকেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহকারী হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শুধু জীবিকা নয় এর প্রভাব পড়েছে পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যে। দ্রুত নদীর নাব্য ফিরিয়ে এনে প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষার দাবি বিশেষজ্ঞ ও নদীপাড়ের মানুষের।

কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার এবং লালমনিরহাট সীমান্ত দিয়ে ধরলা ও তিস্তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এ জেলার ওপর দিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। বছরের পর বছর ড্রেজিংয়ের অভাবে এসব নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে দু’কূল ছাপিয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। এখন শুকনো মৌসুমে এসব নদ-নদী শুকিয়ে কোথাও কোথাও সরু ক্যানেলে পরিণত হয়েছে। পুরো নদীর বুকজুড়ে অসংখ্য চর জেগে ওঠায় এবং পানির স্রোত থেমে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে নৌ-পথ। বেকার হয়ে পড়েছেন নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবীরাও।

নদী পাড়ের বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বলেন, এক সময় এই নদীতে শুকনো মৌসুমেও যথেষ্ট পানির প্রবাহ ছিল। নদীর পানিতেই চলতো কৃষি কাজ; কিন্তু পুরোটাই এখন উল্টো চিত্র। নদীর বুকজুড়ে ধু-ধু বালু চর। অনেক মানুষ নদীর বুকে মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ফসল চাষাবাদ করছে। দুধকুমার নদীপাড়ের আরেকজন বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, নদীতে কোনো পানি নেই। একসময় যে পানির তোড়ে জমির পর জমি বিলীন হয়ে যেত সে নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীর মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে, তারাও বেকার হয়ে পড়েছেন।

ধরলা পাড়ের বাসিন্দা রাজু মিয়া বলেন, ধরলা নদীতে কোনো পানি নেই। ধরলার পানিতে মাছ ধরে যারা জীবন চালাত, তারা এখন প্রায় সবাই বেকার।

 কুড়িগ্রাম সরকারি মহাবিদ্যালয়ের উপধ্যক্ষ ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান, (উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ) মীর্জা নাসির উদ্দিন বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নদীর এ বৈরী আচরণ। শুকনো মৌসুমে নদী পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ায় বড় বড় বিলগুলোও পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রকৃতি ও প্রাণিকুলের মাঝেও।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম, নদী শাসন ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে বলে জানালেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //