নছিমনচালককে চারদিন ধরে আটকে রেখেছেন ইউএনও

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চারদিন ধরে এক দরিদ্র নছিমনচালককে আটক রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউএনও’র গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করায় ক্ষতিপূরণ আদায়ে নিজ কার্যালয়ে ওই চালককে আটকে রেখেছেন তিনি।

এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এমনকি নছিমনচালককে নিজ কার্যালয়ে আটকে রাখার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তবে চারদিন নয়, আড়াই দিন ধরে তাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি তার।

তবে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক-ইলাহী চৌধুরী।

জানা গেছে, রবিবার (৩ মে) ভোলা সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় থেকে যাচ্ছিলেন চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। এসময়ে তাকে বহনকারী গাড়িটি অতিক্রমকালে সদর উপজেলার বাসিন্দা আরিফের নছিমনের সাথে ইউএনওর গাড়ির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার পর আটক করা হয় নছিমনচালককে।

ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, নছিমনচালককে আটক করে চরফ্যাশন থানায় সোপর্দ করা হয়। তারপর বিবেচনা করে দেখলাম তাতে তো ক্ষতিপূরণ উঠবে না। তাই আমার অফিসে নিয়ে আসি। এখানে আটকে রেখে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে চাই।

তিনি বলেন, আমি ওর মা-বাবাকে খবর দেয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু ওর মা-বাবা আসেনি। এখন আমি কি করবো? আমি চেয়েছিলাম ক্ষতিপূরণ নিয়ে ওর মা-বাবা আসবে। কিন্তু তার আগেই সাংবাদিকরা এসে সব গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছে। তাছাড়া নছিমনচালক একটা নেশাখোর। এজন্য ওর মা-বাবা ওকে নিতে আসে না।

ইউএনও বলেন, ওকে আটকে রাখা ছাড়া আমার কিছু করার ছিলো না। দুর্ঘটনায় আমার ব্যবহৃত গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি আসলে কে মেরামত করবে? একজন ইউএনও কতটাকা বেতন পায় বলুন?

পাল্টা প্রশ্ন করে রুহুল আমিন বলেন, আমি চাইলে ওইদিন নছিমনচালককে কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতাম। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে অফিসে এনে আটকে রেখেছি। নছিমনচালক কত টাকার মালিক এবং তিনি কিভাবে ক্ষতিপূরণ দেবে- প্রশ্ন করা হলে ইউএনও বলেন, তাহলে আমি কেন ক্ষতিপূরণ দেব?

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আরিফকে দুপুরে ও রাতে খাবার দেয়া হয়। বাকি এক বেলা আরিফ নিজের পকেটের টাকায় খাবার কিনে খাচ্ছে।

আরিফ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে বলেন, আমার কিছু নেই যে বিক্রি করে এনে ইউএনও স্যারকে টাকা দিমু। তারপরও অনেক কষ্টে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি তা নিতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, গাড়ির ক্ষতি হয়েছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। আমাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //