শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখী মানুষের ঢল

ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। আজ বুধবার (১২ মে) ভোর থেকেই গন্তব্যের উদ্দেশে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় এসে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার যাত্রী। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই ভিড়ও বাড়ছে। 

মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুর বাংলাবাজার নৌরুটে গত কয়েক দিন স্বল্প আকারে ফেরি চালানো হলেও ঘরমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ফেরি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার (১১) সকাল থেকে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলাচল করছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে। 

ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, সকাল থেকে কয়েক হাজার যাত্রী ঘাটে জড়ো হয়েছেন। যাত্রীদের চাপ এত বেশি যে বাংলাবাজার থেকে আসা ফেরিগুলোকে আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না।

আজ সরেজমিন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জনস্রোত সামলাতে শিমুলিয়া ঘাটে বসানো হয়ছে চেকপোস্ট। দায়িত্ব পালন করছেন বিজিবি সদস্যরা। তারপরও মানুষের ঢল থেমে নেই। সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করার কারণ হিসেবে নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন ঘরমুখী যাত্রীরা। তাদের সবার লক্ষ্য, যেভাবে হোক বাড়ি যেতে হবে। ফেরিঘাটের আশপাশে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জেলে নৌকাসহ ট্রলারে যাত্রীরা পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করছেন।

শিমুলিয়া ঘাটসূত্র ও স্থানীয় লোকজন জানান, যখনই একটি ফেরি ঘাটে ভিড়তে দেখেছেন, তাতে হুমড়ি খেয়ে যাত্রীরা উঠে পড়ছেন। শিমুলিয়া ঘাটের যাত্রীদের চাপে বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা যাত্রীরা ফেরি থেকেও নামতে পারছেন না। প্রতিটি ফেরিতে এখনো যানবাহনের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা বেশি দিয়ে পদ্মা নদী পার করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, এ ঘাটে আসা প্রত্যেক যাত্রীর অবস্থা এমন হয়েছে, যেভাবেই হোক তারা বাড়ি যাবেন, ফেরিতে উঠবেন। পানিতে পরবেন, নাকি ফেরির নিচে পড়বেন, সে ভয় কারও মধ্যে নেই। করোনার ভয়তো অনেক দূরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারও চায় না মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌযান ও চোরাই পথে পদ্মা পাড়ি দিক। আবার ঈদে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাক। তাই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথ দিয়ে সব কটি ফেরি চালানো হচ্ছে। যাত্রী চাপ বেড়েছে। ঘাট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কোনোভাবে এতে যাত্রীদের ভোগান্তি কমানো যাচ্ছে না।

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘাটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ১৩ থেকে ১৪টি ফেরি চলছে। আজ সকাল থেকে এ ঘাটে কয়েক হাজার যাত্রী জড়ো হয়েছেন। আজ ঘাটে প্রচণ্ড যাত্রী চাপ রয়েছে। যাত্রীদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঘাটের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের। চাপ এত বেশি যে বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসা ফেরিগুলোকে আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, যখন একটি ফেরি ঘাটে বেড়ানো হচ্ছে, তখন যাত্রীরা উঠে পড়ছেন। কোনোভাবেই তাদের ফেরি থেকে নামানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই যাত্রীসহ ফেরিগুলো বাংলাবাজার ঘাটে পাঠানো হয়। এ মুহূর্তে ঘাটে ছোট-বড় তিন শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //