বেতাই নদী কেন খাল

এক বুক দুঃখ নিয়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়েছিল দুঃখ বিলাসী এক নদী, যে কারণে নদীর নামই হয়েছিল বেতাই নদী। নামকরণ থেকেই বুঝা যায় কতটা দুঃখ লুকিয়ে রেখেছে জলের বুকে। মৃতপ্রায় নদীটিকে আশায় বুক বেঁধেছিল একদিন হয়তো খননে আবার আগের জীবন্ত হয়ে চির যৌবনা হয়ে ওঠবে, ফিরে পাবে নাব্য। আর সে আশা পূরণ হলো না বেতাই নদীর। তা না হলে নদী খাল হবে কেন? যে নদীর ইতিহাস ঐতিহ্যকে কেন্দুয়ার মানুষ আজও বুকে ধারণ ও লালন করে আসছে।

আজ ইতিহাস বিকৃতকারীরা বেতাই নদীর নাম পাল্টে ইতিহাস ঐতিহ্যকে নষ্ট করে খাল খননের প্রকল্প এনে নদীটিকে খালে পরিণত করায় ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে নদীটির নাম-নিশানা। মোগল আমলে জঙ্গল বাড়ির জমিদার ঈশাখাঁ এই বেতাই নদীর তীরেই রোয়াইবাড়ি দুর্গ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। যা প্রত্নতাত্ত্বিকরা পুরাকৃর্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বেতাই নদী সান্দিকোনা ও রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য অবস্থিত; কিন্তু কাগজপত্রে বেতাই নদী, প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে বেতাই খালে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে। 

এদিকে স্থানীয় জনগণ বলছেন, এ নদীটি আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক বাহক; কিন্তু এখন এই নদীটি কীভাবে খাল হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। এলাকার কিছু কুচক্রি মহল বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাতের জন্যই তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বেতাই নদীটিকে খালে পরিণত করেছে। প্রকৃত নাম বেতাই নদী এর নাম পাল্টিয়ে খাল বানিয়ে প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে ইতিহাস বিকৃতি করার পাঁয়তারা চালাছে।

 এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু সমাধান চাই। এ ব্যপারে রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস, এম ইকবাল রুমি বলেন, নদী বা খাল খননে আমার কাছ থেকে কোনো অনাপত্তি সনদ নেওয়া হয়নি। জনগণ আরও বলছেন-নতুন প্রজন্ম আগামী দিনে বেতাই নদীকে খাল হিসেবে চিনবে। এ ইতিহাসকে বিলুপ্ত করা যাবে না। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈনউদ্দিন খন্দকার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হাসানকে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দুয়া এলজিইডি কর্মকর্তা জাকির হাসান জানান, প্রায় ১১ কিলোমিটার প্রকল্প ১৪টি স্কিমে বিভক্ত এবং ২ কোটি টাকার ওপরে বরাদ্দ। তিনি বলেন, লোকমুখে শুনেছি বেতাই খাল, কাগজপত্রে বেতাই নদী লেখা তা আমার জানা নেই। বিষয়টি ঈদের ছুটি শেষে তদন্ত করে দেখব। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ টিম এসে তদন্ত করবে।

এ বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে প্রকল্পের সভাপতি মো. ইসলাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, -আমরা প্রকল্প অনুমোদন করিনি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা অনুমোদন মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, তা সরকার জানে ও যারা প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে তারা জানে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //