গোপালগঞ্জে প্রথমবারে মতো বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল উৎপাদন

বহুমাত্রিক পুষ্টি ও আয়ুর্বেদিক গুণ সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল সাধারণত মরু অঞ্চলে ভালো জন্মে, কিন্তু এই প্রথম বিল-বাওড়ের জেলা গোপালগঞ্জে ড্রাগন ফল উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন জেলার মুকসুদপুর উপজেলাধীন বাটিকামারীর আলোকিত মানুষ, শিক্ষাবিদ মো. নজরুল ইসলাম পান্নু।

গোপালগঞ্জের মকসুদপুর উপজেলার নজরুল ইসলাম পান্নু তার দুই সহোদর কামরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম রফিককে সঙ্গে নিয়ে ব্যক্তিগত বিনিয়োগে নিজেদের জমিতে ড্রাগন ফল চাষের কার্যক্রম শুরু করেন প্রায় ৭ মাস আগে। উদ্দেশ্য একটাই, এলাকার মানুষ সাশ্রয়ে দামী এই ড্রাগন ফল খেতে পারবে, এতে করে এলাকার পুষ্টি চাহিদা মিটবে, আবার দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ড্রাগন ফল চাষি মো. নজরুল ইসলাম পান্নু বলেন, এই ড্রাগন ফল বাগানে জাত ভেদে হলুদ, সাদা, লাল, গোলাপি, কালো ও ছাইয়া কালো রঙের ড্রাগন ফলের গাছ আছে। ‘ল্যাদা’ নাম অত্যন্ত বিষাক্ত পোকার আক্রমণে ড্রাগন ফল গাছগুলো ঠিকমতো বাড়তে পারছে না, আমরা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০/১১টা পর্যন্ত এই পোকা মারার কাজ করছি প্রতিনিয়ত, সন্ধ্যার পর থেকে এই পোকার আক্রমণের তীব্রতা বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বারবার জানানোর পরেও তার কাছ থেকে আশাব্যঞ্জক কোনো সাড়া পাইনি। এই ল্যাদা পোকার আক্রমণ প্রতিহত করতে পারলে আগামী ৪/৫ মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে ফল আসবে বলে আশা করছি। 

মুকসুদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি অতি সুস্বাদু একটি ফল। প্রতি কেজি ড্রাগনফল আট-নয়শত টাকায় বিক্রি হয়। কৃষি বিভাগ থেকে যে কোনো সমস্যায় পরামর্শ প্রদান করবো। এ ছাড়াও কৃষি বিজ্ঞানের কনসালট্যান্টদের সহায়তায় পরামর্শ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আমি ও আমার দুই সহকর্মী ড্রাগন ফল বাগানটি ভিজিট করেছি, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি, আশা করছি, এই পোকার আক্রমণ প্রতিহত করতে পারব। 

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের রহমান রাশেদ বলেন, সাধারণত মরু অঞ্চলে উৎপাদিত এই ড্রাগন ফলে রয়েছে বহুমুখী পুষ্টিগুণ, অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে এই ফলের চাষ করতে হয়, গোপালগঞ্জ জেলায় এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের এতবড় বাগান এটি। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে ড্রাগন ফলের বাগানকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে নিয়মিত ফলোআপ এবং করণীয় ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্য, সহযোগীতা করা হবে। বাটিকামারির এই ড্রাগন ফল বাগানের মালিক পক্ষের নিয়মিত পরিচর্যা এবং কৃষি সেক্টরের রুটিন মাফিক কারিগরি সহায়তা ও ফলোআপ নজরুল ইসলাম পান্নুর চ্যালেঞ্জকে সফলতার মুখ দেখাতে পারে, এমনটাই আশা করছেন এলাকার মানুষজন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //