স্বেচ্ছাশ্রমে ৯০ ফুট সাঁকো নির্মাণ

জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কবি শেখ ফজলল করিমের স্মৃতিবিজড়িত কাকিনা ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা শাখা নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে ৯০ ফুট সাঁকো নির্মাণ করেছেন এলাকাবাসী। গত ২০মে মাটি কেটে, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। 

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে বন্যার পানির তোরে কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ী এলাকায় সেতুটি ভেঙে যায়। তখন থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি নির্মাণের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতি বছর এলাকাবাসী ভেঙে যাওয়া সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়ে আসছেন। তবে এ বছর গ্রামবাসী বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নেয়। তারা গ্রামের লোকজন, স্থানীয় ব্যবসায়ী, এলাকার জেলে ও কৃষকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আর কয়েক দিন স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে এবার বাঁশের সঙ্গে কাঠ দিয়ে কিছুটা মজবুত করে ৯০ ফুট সাঁকো নির্মাণ করেন। এ ছাড়া তারা মাটি কেটে সাঁকোর দুই পাশের রাস্তাও উঁচু করেন। গত ২০ মে সাঁকো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে গ্রামের লোকজন ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর দুর্ভোগ লাঘবে স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটের বাক্স ভরেছেন জনপ্রতিনিধিরা; কিন্তু কেউ কথা রাখেননি। অবশেষে এলাকাবাসী নিজেরাই অর্থ ও স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে ৯০ ফুট দীর্ঘ এ সাঁকো নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন । 

ওই এলাকার ছকের আলী (৬০) জানান, গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাশ্রমে এ সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগে থাকা ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ সাময়িকভাবে লাঘব হলো। তবে স্থায়ীভাবে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান গ্রামবাসী। একই এলাকার শহিদ উদ্দিন বলেন, কয়েক বছর আগেও কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ ও উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান এসে ওই সেতুটি দেখে জনগণের দুঃখ কষ্টের জন্য আফসোস করে এলাকাবাসীকে কথা দিয়ে গেছেন; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। 

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার ফেরদৌস আলম বলেন, বিষয়টি আমাদের নয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের বক্তব্য নিন। উপজেলা প্রকৌশলী আবু তাহের শামসুজ্জামান বলেন, ওই সাঁকোটি অনেক পূর্বেই নির্মাণ হয়ে যেত; কিন্তু লকডাউনের কারণে তা হয়নি। লকডাউন শিথিল হলেই ঠিকাদার নিয়োগ হবে এবং সেখানে দ্রুত সেতু নির্মাণ হবে।

শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হলেও বর্ষা মৌসুমে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। সেসময় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে পারেন না। বর্ষা এলেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ছাত্রছাত্রীরা যেতে পারে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাই কষ্ট লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //