তিস্তায় বিলীন স্থানীয়দের সহায়তায় দেয়া বালুর বাঁধ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় তিস্তার তীরে স্থানীয়দের সহায়তায় গড়া বালুর বাঁধের অর্ধকিলোমিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।

স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদী মরুভূমিতে পরিণত হলেও বর্ষার শুরুতে উজানের ঢলে ফুলে ফেঁপে উঠে হিংস্র রূপ ধারণ করে তিস্তা নদী। প্রতিবছর তীর ভেঙে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে পথে বসছে তিস্তাপাড়ারের  হাজার হাজার পরিবার। জন্মলগ্ন থেকে তিস্তা নদী খনন না করায় সামান্য পানিতে দুইকুল উপচিয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। চরম দুর্ভোগে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। দুর্ভোগ লাঘবে নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

নিজেদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বালুর বাঁধ তৈরী করা হয়। স্থানীয়রা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধটি নির্মাণ নির্মিত হয়। বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় আশায় বুক বাঁধে নদী তীরবর্তী কুটিরপাড়, বালাপাড়া ও চৌরাহা এলাকার কয়েক হাজার পরিবার।

তবে গত ৩দিনে তিস্তার প্রবল স্রোতে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হয়ে যায়। বাঁধটি বিলীন হওয়ার পর থেকে গত ৩ দিনে প্রায় ১০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন। তারা তাদের ঘর বাড়ি ও আসবাবপত্র উঁচু রাস্তায় বা অন্যের উঠানে স্তূপাকারে রেখেছেন। জমির অভাবে তারা ঘর তুলতে পারছেন না। বাঁধটি এবং পাশের গ্রাম তিনটি রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ১০ হাজার জিও ব্যাগ প্রয়োজন বলে স্থানীয়দের দাবি।

কুটিরপাড় এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রামবাসী সহায়তা বালুর বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটি হওয়ায় আশা করেছিলাম এ বছর আর নদী ভাঙনের মুখে পড়তে হবে না। পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবো। কিন্তু বর্ষার শুরুতে পানির চাপে ৩দিনের ব্যবধানে বালুর বাঁধটি বেশির ভাগ অংশই বিলীন হয়েছে। বাঁধটি বিলীন হলে বাড়ি ঘর নদীর মুখে পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে ঘর বাড়ি সরায়ে নিয়েছি। দুই আগেও পরিবার নিয়ে যেখানে ঘুমাতাম। আজ সেখানে নদীর স্রোত বইছে। বাকি অংশটুকু রক্ষা করা সম্ভব না হলে বর্ষার আগে কুটিরপাড়, চৌরাহা ও বাদিয়ারটারী গ্রাম বিলীন হতে পারে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন মজুদ আছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা ইউএনও তা বিতরণ করবেন। আর বালুর বাঁধটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া আছে। নদী ভাঙনের সর্বশেষ তথ্য সার্বক্ষণিক মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //