বোরোর ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা খুশি

করোনাভাইরাসের মধ্যেই ভালো খবর পেয়েছে বোরো চাষিরা। ধানের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবছর বোরো ধান সর্বোচ্চ ১১শ’ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। 

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত জেলায় ধান কাটা শেষ হয়েছে। অল্প কিছু ধানকাটা বাকি রয়েছে জেলার পশ্চিমাঞ্চলে। কয়েক দিনের মধ্যে সেসব ধানও কাটা শেষ হয়ে যাবে। জেলার বেশিরভাগ হাটে বাজারে বেশ কিছু দিন আগে থেকেই ধান ও চাল কেনাবেচা শুরু হয়েছে। 

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, মে মাসে করোনাভাইরাসের প্রভাব থাকলেও কৃষি শ্রমিক সংকট সৃষ্টি হয়নি। সংকট না থাকায় বোরো ধান কেটে চাষিরা হাটে বিক্রি করেছে। শুরুতে কাঁচা ধান ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। এরপর শুকনা ধান এক হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয়। পরে চিকন ধান বিক্রি হয়েছে ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা মণ। বর্তমান বাজারে হাজার টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। 

বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাঁচপীর এলাকার বোরো চাষি আব্দুল বাসেদ জানান, এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, চাষ, সেচসহ বিক্রি পর্যন্ত ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। সড়কের পাশে জমি হলে খরচ কম হয়। জমি ভেদে ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়া যায়। এবার বাজারে দাম থাকায় কিছুটা হলেও লাভের দেখা গেছে। হাটে এখন শুকনা ধান বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা মণ। ধানের দাম এমন থাকলে কৃষকরা লাভ পাবে এবং ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে। গত বছর ধান বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মণ।


বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২ উপজেলার বোরো চাষিরা সময়মতো বোরো চাষ করে। চাষবাস শেষে ফলন ঘরে তুলে কেনাবেচা করছে চাষিরা। জেলায় এবার এক লাখ ৮৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও সেখানে বোরো চাষ হয় এক লাখ ৮৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৫ হেক্টর জমিতে কম চাষ হয়েছে। ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় প্রায় সাত লাখ ৭২ হাজার ৯৭৪ টন। 

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পরিবেশ দূষণ কম থাকার কারণে ফলন বেড়ে যাবে।

বোরো চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে শুকনা ধান বিক্রি করেছেন এক হাজার ৫০ টাকা মন। এবার ধান বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ২৫ মণ ধান হয়েছে। গত বছর বাজারে ধান বিক্রি করে শেষ পর্যন্ত কিছু আয় হয়েছিল। এবার বাজারে শুরুতেই ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ বিক্রি হয়। পরে ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকা মণ ধান বিক্রি হয়েছে। এদামে বিক্রি করতে পারলে আয় হবে। 

ধান ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁচা প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা দরে অপরদিকে শুকনা প্রতি মণ ধান ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হয়েছে। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. দুলাল হোসেন জানান, বগুড়ায় বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ। গত বছরের মতো এ বছরও ভালো ফলন পাওয়া গেছে। জেলায় বেশিরভাগ উফশী বা উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো চাষ হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //