পাবনায় অবিক্রিত কোরবানির পশু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

একটু লাভের আশায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে বিক্রির জন্য হাটে তোলা কোরবানির পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পাবনার ব্যবসায়ীরা। হাট থেকে ফেরত আসা অবিক্রিত এসব পশু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও খামারিরা। 

করোনা আর লকডাউরে কারনে এবারের ঈদের হাটে ক্রেতা উপস্থিতি ছিলো খুবই কম। তাই এবারে হাটগুলোতে আমদানি হওয়া পশু অবিক্রিত থেকেছে অনেক। রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় জেলা শহরগুলোতে নেয়া বেশিরভাগ পশুই বিক্রি করতে না পেরে ফেরত নিয়ে আসতে হয়েছে তাদের। হাট থেকে ফেরত আনা পশু এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই দেনাদারদের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাহিরে। 

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের সূত্রে মতে, এবারের ঈদুল আজহায় পাবনায় ৩ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত ছিলো। ব্যবসায়ী’রা পাবনা থেকে নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার তাদের আশা যেন গুড়েবালি হয়েছে। ধার-দেনা আর ঋণ করে লাখ লাখ টাকার গরু কিনে বিক্রি হয়নি বেশির ভাগ পশু। এছাড়াও ফিরতি পথে দ্বিগুণ পরিবহন ভাড়া দিয়ে আবার বাড়িতে আনতে হয়েছে। এতে প্রতিটা গরু ব্যবসায়ীদের চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়েছে। 

পাবনা সদরের চর তারাপুর গ্রামের পশু ব্যবসায়ী মোকাদ্দেস প্রামানিক বলেন, এবারে কোরবানির ঈদে ২২টি গরু ঢাকায় নিয়েছিলাম। ৬টি গরু কম দামে বিক্রি করে ১৬টি ফেরত আনতে হয়েছে। দেনা করে পশু কিনে এখন চরম বিপদের মধ্যে পড়েছি। বাড়িতে পাওনাদাররা টাকার জন্য আসছে। কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। 

পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপাড়া এলাকার পশু ব্যবসায়ী কালাম শেখ বলেন, ৪৫টি পশু বিভিন্ন গ্রাম থেকে কিনে ঢাকায় নিয়ে ছিলেন। ১৪টি বিক্রি হয়েছে ৩০টি গরু ফেরত নিয়ে আসতে হয়েছে তাকে। 

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্ত ডা. মো. আল মামুন হোসাইন বলেন, এবার কোরবানির হাটে চাহিদার চাইতে কোরবাণির পশুর সরবরাহ বেশি ছিলো। যার কারনে ব্যবসায়ীরা চড়া দাম পাননি। তবে বড় গরুর চাইতে এবার মাঝারি ধরনের গরুর চাহিদা বেশি ছিল। অনলাইনে পশু বিক্রি হয়েছে অনেক। তবে লকডাউন আর করোনার জন্য হাটে ক্রেতার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়েছে। করোনা সংক্রমণের জন্য আমরাও হাটে ভিড় না হওয়ার জন্য অনলাইনের প্রতি জোর দিয়ে ছিলাম। জেলার পশু ব্যবসায়ীরা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পশু নিয়ে সবগুলো বিক্রি করতে পারেনি। যেহেতু চাহিদাকম পশু বেশি তাই অবিক্রিত থেকে অনেক পশু। তবে এই পশু ঈদ পরবর্তীতে মাংসের চাহিদা পূরন করবে। আর ক্ষতিগ্রস্তদের আমরা তালিকা তৈরি করছি। সরকারিভাবে কোন সুযোগ সুবিধা প্রদান করলে অবশ্যই তাদেরকে দেয়া হবে। 

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য মতে, করোনাকালীন সময়ে জেলাতে প্রায় ৬৯টি অনলাইন পশুর হাট বসে ছিলো। প্রায় লক্ষাধিক পশু বিক্রি হয়েছে অনলাইনে। সেই কারনে হাটে ক্রেতার উপস্থিতি কম হয়েছে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //