স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে বাংলাবাজার ঘাট

লকডাউন শেষে মাদারীপুর জেলার শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে ফিরে এসেছে স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য। নৌরুটে ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর থেকে শুরু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে দূরপাল্লার বাস। এছাড়া লোকাল বাস, মাইক্রেবাস চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ঘাটের টার্মিনালে ব্যস্ত সময় পার করছে পরিবহন চালক ও শ্রমিকেরা। ঘাটের টার্মিনালে বন্ধ থাকা দোকানগুলোও ভোর থেকে খোলা হয়েছে। ক্ষণে ক্ষণে বাজছে লঞ্চের সাইরেন। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে ব্যস্ততম বাংলাবাজার ঘাট।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে নৌরুটে লঞ্চ চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। লকডাউন শেষে সকাল থেকেই দূরপাল্লার বিভিন্ন জেলা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস চলাচল শুরু করেছে। গণপরিবহন চালু হওয়ায় ঘাট এলাকায় পূর্বের মতো ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে। পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যেও রয়েছে ব্যস্ততা। ঘাটের বাস কাউন্টার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে সংশ্লিষ্টরা। লকডাউন না থাকায় ঘাটে গন্তব্যস্থলে যাওয়া যাত্রীদের ভিড় রয়েছে বুধবার সকাল থেকেই।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন শেষ হলে বুধবার সকাল থেকে নৌরুটে লঞ্চ চালু হয়েছে। এতে করে ফেরিতে সাধারণ যাত্রীদের পারাপার কমেছে। যাত্রীদের বেশিরভাগই লঞ্চে পার হচ্ছে। ফেরি ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান সহ অন্যান্য যানবাহন আটকে আছে। এছাড়াও নিয়মিত আসা ছোট যানবাহনের সংখ্যা বুধবার ভোর থেকে বেড়েছে। সকাল থেকে নৌরুটে দশটি ফেরি চলাচল করছে। ফেরিতে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল পর্যাপ্ত সংখ্যক পার করা হচ্ছে। তবে ভারী যানবাহনের মধ্যে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ড ভ্যান সীমিত সংখ্যক করে পার করা হচ্ছে। ৫টি কে টাইপ ১টা ছোট ফেরিসহ ৬টি ফেরি চলাচল করছে।

বরিশাল থেকে আসা যাত্রীরা বলেন, ‘অনেক দিন পর স্বস্তি নিয়ে ঘাটে আসতে পারলাম। বরিশাল থেকে গাড়িতে উঠেছি। সরাসরি ঘাটে এসে নামলাম। জরুরি কাজে ঢাকা যাচ্ছি। তবে মানসিকভাবে বেশ শান্তি লাগছে। সব গাড়ি চলছে। লঞ্চ চলছে। পথের ভোগান্তি দূর হয়েছে।’

গোপালগঞ্জের যাত্রী আনিকা আক্তার বলেন, ‘লকডাউন না থাকায় বাস চলছে। ফলে স্বস্তিতে ঘাটে আসতে পেরেছি। যদিও ভিড় রয়েছে। তারপরও ঢাকায় যেতে পথে পথে হাঁটতে হবে না। চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে।’


তিনি আরো বলেন, ‘সকল বাসে যাত্রী নামানোর পরে স্যানিটাইজার দিয়ে স্প্রে করা উচিত। এছাড়াও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। এভাবেই আমাদের গুরুত্বের সাথে স্বাস্থ্যবিধি মানার অভ্যাস করতে হবে।’

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, টানা ১৯ দিন পর নৌরুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে নৌরুটের ছোট-বড় ৮৭ টি লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। লঞ্চ চলাচলের ক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এছাড়া পূর্বের ন্যায় যাত্রীদের ভাড়া ৩৫ টাকাই থাকছে। ঢাকাগামী এবং ঘরমুখো সকল যাত্রীদেরই ভিড় সকাল থেকে রয়েছে লঞ্চ ঘাটে।

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ‘লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে নৌরুটে। মোট ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। লকডাউনের আগের নিয়মেই লঞ্চ চলবে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত।’

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নৌরুটে ৬টি ফেরি চলছে। ফেরিতে ভারী যানবাহন পারাপারের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ফেরিতে ভারী যানবাহন সীমিত সংখ্যক করে পার করা হবে। ঘাটে এখনো অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //