দিনাজপুরে মা-ছেলেকে অপহরণ মামলা ডিবিতে হস্তান্তর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মা-ছেলেকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় এএসপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মামলায় রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবির, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক, মাইক্রোবাস চালক হাবিব, নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার এনামুল হকের ছেলে ফসিহউল আলম পলাশসহ ৯ জনের নাম রয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত তিন থেকে চারজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলা হস্তান্তরের আদেশ হয়েছে। তবে এখনো কাগজপত্র হাতে পাইন। কাগজ পেলেই আমরা তদন্তে নেমে যাব।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লুৎফর রহমানের ভাই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। এ মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

এর আগে বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে মাইক্রোবাসে করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এএসপি সারোয়ার কবীরসহ পাঁচজনকে আদালতে নেয়া হয়। দিনাজপুর আমলি আদালতের-৪-এর বিচারক শিশির কুমার বসু সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসাথে অপহরণের শিকার মা ও ছেলেকে ছেড়ে দেয়ারও আদেশ দেন আদালত।

জানা গেছে, ২৩ আগস্ট রাত ৯টায় চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেরাই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মা জহুরা বেগম (৪৬) ও ছেলে জাহাঙ্গীরকে (২৫) ডিবি পুলিশের পরিচয়ে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করা হয়। এ সময় মা ও ছেলেকে মারপিটও করে অপহরণকারীরা।

জহুরা বেগমের বাড়ির লোকজন র‌্যাব, ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকের বিষয়ে খোঁজ নেয়। কিন্তু কেউ আটকের বিষয়ে কিছু বলতে পারে না। পরে অপহরণকারীরা মোবাইলে জহুরা বেগমের স্বামী লুৎফর রমান ও দেবর রমজানের কাছে প্রথমে ৫০ লাখ এবং পরে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধারে মুক্তিপণের টাকা দিতে যান স্বামী লুৎফর রহমান ও দেবর রমজান আলী। তাদের সাথে সিভিল পোশাকে পুলিশ রয়েছে টের পেয়ে অপহরণকারীরা সাথে থাকা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ১০ মাইল নামক স্থানে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে। অভিযানে জেলা পুলিশ ও চিরিরবন্দর থানার পুলিশ অংশ নেয়।

আটকের পর পুলিশ জানতে পারে অপহরণকারীদের মধ্যে রংপুর জোনের সিআইডি পুলিশের এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনেস্টবল আহসান উল ফারুক ও চালক হাবিবুর রয়েছেন। বুধবার অপহৃত মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরকেও ডিবি অফিসে জিজ্ঞাবাদের জন্য আনা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিআইডির কাছে চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের গাদুশাপাড়ার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ আনেন ফসিউল আলম পলাশ নামে এক ব্যক্তি।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ আগস্ট রাতে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার সারোয়ার কবীর সোহাগ, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসান উল ফারুক ও চালক হাবিবুব লুৎফরের বাড়িতে যান। তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যান তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //