গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে সিআইডি কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেফতার

ঢাকায় কর্মরত গোয়েন্দা পুলিশের এক এসআইয়ের স্ত্রী সুমী খাতুনে বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নাটোরে মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

গতকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে গৃহকর্মীকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে গেলে সুমী ও তার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। মধ্যরাতে সুমীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা। নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী (১৩) পাইকেরদল গ্রামের বাসিন্দা। 

সুমী সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনি গ্রামের আসাদুলের মেয়ে ও ঢাকায় কর্মরত গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খন্দকার আতিকুর রহমানের স্ত্রী। সদর থানার ওসি মনসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নির্যাতনের শিকার কিশোরীর চাচাতো ভাই সোহেল জানান, তিন বছর আগে সদর হাসপাতালের সামনে সুমীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামির বাসায় মাসিক এক হাজার ২০০ টাকা বেতনে চাচাতো বোনকে গৃহকর্মীর কাজে দেন। মজুরি বাবদ এক হাজার টাকা করে আট মাস দেয়া হলেও আর কোনো টাকা পায়নি কিশোরীর পরিবার। বার বার বলার পরেও ওই কিশোরীকে বাড়ি আসতে দেয়া হয়নি। এমনকি তার দাদা মারা গেলেও তাকে আসতে দেয়া হয়নি। অবশেষে তার মা বার বার ফোন করলে বুধবার রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে সুমী ও তার মা।

কিশোরীর ভাবি সুলতানা বলেন, আমার ননদ বাড়ি পৌঁছার পর তাকে স্বজনদের কাছে আসতে বাধা দিচ্ছিলো সুমী। এসময় সন্দেহ হলে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখি তার মুখ ও হাতে আঘাতের দাগ। ১০ মিনিট যেতে না যেতেই সুমী তাকে নিয়ে চলে যেতে চান। এসময় ননদের সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, করোনাকালে তারা সুমীর বাবার বাড়ি ভাবনি গ্রামে থাকতের। সেখানে তাকে বিভিন্ন অজুহাতে তার ওপর নির্যাতন করে সুমী। 

ওই গৃহকর্মী অভিযোগ করেন, সুমী তাকে দিয়ে গরু-ছাগলের ঘাস কেটে নেয়াসহ নানা কাজ করাতো। সামান্য দোষেই তাকে হাতা ও লোহার প্লাস দিয়ে আঘাত করা হতো, গরম ইস্ত্রি চেপে ধরেও নির্যাতন করতো সুমী। 

স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদুল রহমান সেলিম বলেন, গৃহকর্মীর পরিবার অতি দরিদ্র। তাই তাকে কাজে দিয়েছিল। অথচ স্বামী আইনের লোক হলেও সুমী গৃহকর্মীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তার মানবাধিকারও লঙ্ঘন করেছে। এমনকি তার ন্যায্য পাওনা টাকাও দেয়নি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। 

নাটোর সদর থানার ওসি মনসুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের পর সুমীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //