জলে বসবাস ৪০ বছর

যশোরের দুঃখ ভবদহ। গত ৪০ বছর ধরে ভবদহের বাসিন্দারা পানির সঙ্গে বসবাস করছেন। সরকার প্রকল্প নেয়; কিন্তু ভবদহ অঞ্চলের মানুষের অভিশাপ ঘোঁচে না। বর্তমানে অভয়নগর ও মণিরামপুর উপজেলার ৮০টি গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর, শিক্ষা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পানি থাকে সারাবছরই। 

যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরা সম্প্রতি ভবদহ অঞ্চল ঘুরে এসেছেন। 

সংগঠনের নেতা অধ্যাপক সুকুমার দাস জানান, ভবদহ অঞ্চলের মানুষের কষ্ট চোখে দেখা যায় না। বছরের পর বছর ধরে তারা পানির সঙ্গে বসবাস করছেন। সরকার প্রকল্প নিচ্ছে; কিন্তু মানুষ সুফল পাচ্ছে না। সুফল ভোগ করছেন সুবিধাবাদিরা। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এসে ভবদহ অঞ্চল ঘুরে দেখার অনুরোধ জানান।

ভবদহ অঞ্চলে যখন এই অবস্থা, তখন এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচের কাজ চলছে। ভবদহ ২১ ভেন্ট (কপাট) স্লুইস গেটের ওপর ১৪ এবং ৯ ভেন্ট স্লুইস গেটের ওপর ৬টি বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র বসানো আছে। স্লুইস গেটের একপাশের নদী থেকে পাইপের মাধ্যমে অপর পাশে নদীতে ফেলা হচ্ছে। ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্ক্যাভেটর দিয়ে ২১ ভেন্ট স্লুইস গেটের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার শ্রী ও টেকা নদীতে পাইলট চ্যানেল কাটার কাজ চলছে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী জানান, আমার নিজ গ্রাম ডুমুরতলায় ১৪৮ পরিবার স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রয়েছেন। 

তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের দায়ী করে বলেন, মানুষকে জিম্মি করে তারা ভবদহের সমস্যা সমাধানের নামে বড় বড় প্রকল্প তৈরি করে লুটপাট করছেন। যে কারণে যুগের পর যুগ এখানে মানুষের চোখের পানি পড়লেও ভবদহের মূল সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ইতিমধ্যে সেচ প্রকল্পের নামে প্রকল্প তৈরি করে পানি অপসারণের কাজ চলছে; কিন্তু টিআরএম বাস্তবায়ন ছাড়া পানি থেকে বাঁচা যাবে না।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করতে চলেছে। ভবদহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নামে এক শ্রেণির নেতারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //