দেশে চাষ হচ্ছে ‘নিষিদ্ধ’ ব্ল্যাক রাইস

দেশে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ হচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে ব্ল্যাক রাইস। কথিত আছে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় চীনের শাসকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘ব্ল্যাক রাইস’ গোপনে চাষ করা হতো। যা প্রজাদের জন্য চাষ করা বা খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিলো। এ কারণে একে নিষিদ্ধ ধানও বলা হয়।

এবারই প্রথমবারের মতো ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা ‘কালো ধান’ চাষ হচ্ছে। ব্যতিক্রম এ ধানখেত এক পলক দেখতে ভিড় করছে কৌতূহলী মানুষ। এই চালের খাদ্যগুণ প্রচুর। রয়েছে ওষধিগুণও ১১টি। অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। কপার, জিঙ্ক, ফাইবারের মাত্রাও বেশ। কার্বোহাইড্রেট কম বলে ডায়াবেটিক রোগীরাও তা খেতে পারেন। চীনসহ অনেক দেশে এই চালে কিডনি, লিভারের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা হয়। তাছাড়া সাদা চাল বা পরিশোধিত ময়দার তুলনায় এটি স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।

রাণীশংকৈল কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথের উদ্যোগে উপজেলার আটজন কৃষক এই ধান রোপণ করেন। প্রত্যেক কৃষককে ব্ল্যাক রাইস ধানের ১ কেজি করে বীজ সংগ্রহ করে দেন তিনি। এখন কৃষকেরা এ ধান কেটে মাড়াই এবং শুকাচ্ছেন। কালো ধানের চাষ এবং উপকারিতা শুনে অনেক কৃষকই এ ধানের বীজ সংগ্রহে ছুটছেন তাদের কাছে। 

রাণীশংকৈলে অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই প্রথমবার এই ব্ল্যাক রাইস ধান চাষ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন উপজেলার জওগাঁও গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন ও জমিরুল ইসলাম, বনগাঁও গ্রামের পয়গাম আলী ও আল্লামা আল ওয়াদুদ বিন নূর (আলিফ), ধর্মগড় ইউনিয়নের ফারুক হোসেনসহ উপজেলার আট কৃষক। 


ব্ল্যাক রাইস ধান সাধারণ ধানের মতো চাষ হলেও এ ধান চাষে অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না আলাদা কোনো পরিচর্যারও। বিঘাপ্রতি জমিতে ১৭-১৮ মণ ধান ফলন হয়েছে।

এ ধানের চাল উৎপাদন করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন রাণীশংকৈল উপজেলার শ্রেষ্ঠ কৃষক পয়গাম আলী। 

কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ জানান, ব্ল্যাক রাইস একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান। ধানের শীষও সাধারণ ধানের চেয়ে বড়। অন্যান্য ধানের মতোই এ ধানের পরিচর্যা করতে হয়। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো। এ চালের ভাতও কালো এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। ব্ল্যাক রাইস শরীরে চর্বি জমতে দেয় না ধীরে ধীরে হজম হয়। এ কারণে ক্ষুধা কম লাগে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //