লঞ্চে আগুন: শেবাচিম হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামে একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ ও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ব‌রিশাল শের-ই বাংলা মে‌ডিক্যাল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে চিকিৎসা নিতে আসাদের স্বজনেরা ভিড় করছেন সার্জারি বিভাগের সামনে। প্রিয়জনের দগ্ধ অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তারা। এতে সার্জারি ইউনিটের সামনে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোর সা‌ড়ে ৫টা থে‌কে সকাল ১০টার মধ্যে ৭০ জনকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভ‌র্তি করা হয়েছে। ভাইয়ের ছেলে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা শুনে শুক্রবার ভোররাতেই শের-ই-বাংলা মেডিকেলর সার্জারি ইউনিটে ছুটে আসেন চাচা জালাল আহমেদ। সার্জারি ইউনিটের সামনে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। 

ভাইয়ের ছেলে অগ্নিদগ্ধ হাওয়ায় অনেকটাই বাকরুদ্ধ জালাল জালাল আহমেদ বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন আমার ভাইয়ের ছেলে লোকমান হোসেন। আমি রাতে ফোন দিলে ও বলে একটু কাজ আছে, আধাঘণ্টার মধ্যেই রওনা দেব। ভাতিজা আমার আর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরল না। আগুনে পুড়ে সে এখন মেডিকেলে ভর্তি।’

ভাগনে ঢাকার রেস্তোরাঁর বাবুর্চি রাশেদ সর্দারের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা শুনে শুক্রবার সকালে সার্জারি ইউনিটে ছুটে এসেছেন মামি তাহেরা আক্তার। সার্জারি ইউনিটের সামনে তার হৃদয়বিদারক আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। তার আত্মচিৎকারে ঘটনাস্থলে থাকা অনেকের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসে।

এক পর্যায়ে তাহেরা বেগম বলেন, আমার ভাগনে রাশেদ বাবুর্চির কাজ করে সংসার চালায়। কিছুদিন আগে তার বাবা মারা যায়। বাবার চেহলামে বাড়ি এসেছিল রাশেদ, তার বড় ভাই, ভাবি ও দুই ভাতিজি, ভাতিজা ও তার মা। আজকের দুর্ঘটনায় রাশেদের ভাই ও মা বেঁচে গেলেও রাশেদের ভাবি ও দুই ভাতিজি, ভাতিজা আর নেই। কী বলে আমি ওদের সান্ত্বনা দেব। আমি কিছু বুঝতে পারছি না।

এদিকে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক বিল্লাল উদ্দিন বলেন, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নামপরিচয় শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //