আমদানি-রফতানির ভার নিতে পারছে না বাংলাবান্ধা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আমদানি-রফতানি চলছে এ বন্দরে। 

কর্তৃপক্ষ বলছে, জায়গা পর্যাপ্ত না থাকায় রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে বন্দর এলাকায় প্রতিদিন পণ্যবাহী ট্রাকের জট নিত্যদিনের ঘটনা। সময়ের পরিক্রমায় বন্দরে আমদানি-রফতানি বাড়লেও জায়গা বাড়েনি বন্দরটিতে। এ কারণে বন্দরের ভেতরে পণ্য লোড-আনলোড করতে সমস্যায় পড়েন আমদানিকারকরা। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ পণ্যবাহী ট্রাক এ বন্দরে আসে। শতাধিক ট্রাক রফতানিপণ্য নিয়ে ভারত ও নেপাল যায়।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট থেকে বন্দর এলাকা পর্যন্ত ৩০০ মিটারের মধ্যে উদ্ভিদসঙ্গনিরোধ ও প্রাণিসঙ্গনিরোধ কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। কাস্টমস বাউন্ডারির মধ্যে বালু ভরাট, ইমিগ্রেশন ভবন ও বিজিবি ক্যাম্প নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এগুলোর দাপ্তরিক কাজ শুরু হলে সড়কে যানজট আরও বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় বন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণ ও বন্দরসংশ্লিষ্ট মাস্টারপ্ল্যান করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বন্দরে সাড়ে ১২ হাজার বর্গফুট ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, ১ লাখ ৩৩ হাজার বর্গফুট ঢালাই করা ইয়ার্ড এবং ১ লাখ বর্গফুট ম্যাকাডাম করা ইয়ার্ড রয়েছে। আমদানি পণ্যের তুলনায় এই ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা খুবই সীমিত।

বন্দরে ৮ হাজার ১০০ বর্গফুট আয়তনের ২টি এবং ৫ হাজার বর্গফুটের ১টি ওয়্যারহাউস রয়েছে। এর মধ্যে এখন কাস্টমসের জব্দ করা ১৯০ টন গম ও ৮৫০ টন চাল রয়েছে। এ কারণে বস্তাজাত পণ্য সংরক্ষণে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এসব সমস্যা সমাধানে অসমাপ্ত ইয়ার্ডের ঢালাই ও ওয়্যারহাউস নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আমদানিকারকরা।

বন্দরের ভেতরে রয়েছে- কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, সোনালী ব্যাংকসহ গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর কার্যালয়। বন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা মাত্র কয়েকজন আনসার সদস্য দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বাংলাবান্ধা থেকে নেপালে সরাসরি ট্রাকে পণ্য রফতানির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক সাইদুর রহমান সাগর।

বন্দরের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম যে হারে বাড়ছে, সে হারে সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। বন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণসহ যাবতীয় সক্ষমতা বাড়াতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। 

বন্দরের আমদানিকারক ও বন্দর শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, প্রতি বছর এ বন্দর থেকে সরকার রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করছে; কিন্তু বন্দর ব্যবস্থাপনায় সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি ট্রাকচালকরা এখানে এসে অনেক সময় দুই থেকে চার দিন আটকা পড়েন। তাদের থাকার জন্য কোনো শেড নেই, নেই খাবারের ব্যবস্থা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //