ধর্মঘট প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

৩৬ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অশালীন আচরণের অভিযোগ করে শাস্তির মুখোমুখি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ শাখার সদস্যরা।

কিন্তু শুক্রবার বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের শাস্তি ও অনাকাঙ্ক্ষিত সকল ঘটনার বিষয়ে পুনঃতদন্তের আশ্বাসে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমন সেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের দাবি ছিল, হাসপাতালে কর্মরত ৬ ইন্টার্ন চিকিৎককে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ সভাপতি মোস্তায়ীন বিল্লাহ তকী, সাধারণ সম্পাদক ইমন সেন, অর্ণব দাশ, মোহাম্মদ হোসাইনের ৩ মাসের বেতন কর্তন করার শাস্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ডা. তরিকুল ইসলাম আবিদের এক মাসের বেতন কর্তনের পাশাপাশি ২ মাস এবং মোহাম্মদ মুস্তফা ইমনকে দুই মাসের বেতন কর্তন ও একমাস অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের শাস্তির সুপারিশ করে ডা. মাহফুজের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ঘোষিত শাস্তি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কর্মে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ সভাপতি মোস্তায়ীন বিল্লাহ তকী।

কক্সবাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মীর ম.ম. বিল্লাহ জানান, গত বছরের ২৬ নভেম্বর কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ অশালীন আচরণের অভিযোগ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় উল্টো প্রহসনমূলক ইন্টার্নদের ওপর অপরাধ চাপিয়ে দিয়ে ছয় ইন্টার্নের বিরুদ্ধে আদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডা. মমিনুর রহমান জানান, কোনো এক কারণে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ডা. মাহফুজুর রহমানকে তার অফিসের দরজা বন্ধ করে মারধর করেন। বিষয়টি জানার পর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন হলে ডা. মাহফুজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উত্থাপন করেন নারী ইন্টার্নরা। তেমনটি হয়ে থাকলে তাকে প্রহার বা তদন্ত কমিটি গঠনের আগে কেন করা হয়নি, এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তারা (ইন্টার্নরা)। এরপরও তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে অধিকতর তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ডা. মাহফুজের অশালীন আচরণের প্রমাণ মেলে। এরপরই তাকে অন্যত্র বদলি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র লেখা হয়। পাশাপাশি ডা. মাহফুজকে প্রহারকারী ছয় ইন্টার্ন চিকিৎসককে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির ঘোষণা করা হয়। এরই জেরে বৃহস্পতিবার ইন্টার্নরা কর্মবিরতি শুরু করে।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানানোর পরই সন্ধ্যার পর ডা. মাহফুজের বদলি আদেশও আসে। শুক্রবার তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। ইন্টার্নদের অভিযোগে একজন চিকিৎসককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এরপরও তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার না করে অব্যাহত রাখে। এ বিষয়ে বৈঠকের পর শুক্রবার বিকেলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে ইন্টার্নরা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //