জিভে জল আনে রঙিন লেডি কেনি!

কুমিল্লার গ্রামাঞ্চল মাতাচ্ছে লালচে-বাদামি রঙিন লেডি কেনি মিষ্টি। মূলত কুমিল্লার নাম উঠলে মুখে আসে রসমালাইয়ের নাম। সেটি কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন দোকান প্রস্তুত করে। তবে কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলে রসমালাই তেমন দেখা যায় না। কুমিল্লার মুরাদনগর, বরুড়া, চান্দিনা ও বুড়িচং উপজেলায় দোকানে দোকানে লেডি কেনি পাওয়া যায়। পাশের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরে এ মিষ্টির চাহিদা রয়েছে।

সরেজমিনে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজারে দেখা যায়, বাজারে ডজনখানেক মিষ্টির দোকান রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি দোকান লেডি কেনির জন্য প্রসিদ্ধ। বাজারটি কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী। পাশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুর। এসব দোকানে এসে লেডি কেনি মিষ্টি ক্রয় করেন বিভিন্ন উপজেলার মানুষ। রামচন্দ্রপুর বাজারের রাজু সুইটসে গিয়ে দেখা দেওয়া, চিনির রসে ডুবে আছে লেডি কেনি। দেখলে জিভে জল আসে। খুচরা ক্রোতারা অধিকাংশ রঙিন লেডি কেনি মিষ্টি খাচ্ছেন।

নবীনগরের বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম তরুণ বলেন, আমরা শৈশবে নৌকা যোগে এই বাজারে আসতাম। বাজারে আসার প্রধান আকর্ষণ ছিল লেডি কেনি মিষ্টি ক্রয়। তখন ৫০ টাকা কেজিতেএ মিষ্টি বিক্রি হতো। 

রামচন্দ্রপুর বাজারের রাজু সুইটসের স্বত্বাধিকারী রাজন ঘোষ রাজু বলেন, এটা আমাদের পৈতৃক ব্যবসা। প্রায় শত বছরের ব্যবসা। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তাই প্রতি কেজি লেডি কেনি ২২০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই অঞ্চলে লেডি কেনির চাহিদা বেশ। 

সাংস্কৃতিক সংগঠন ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, নদীকেন্দ্রিক রামচন্দ্রপুর, হাটখোলা ও চন্দনাইল বাজার এক সময় বিভিন্ন মিষ্টির জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। লেডি কেনিকে স্থানীয় ভাষায় লাল মিষ্টি বা লেদুর মিষ্টি বলে।

কুমিল্লা জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, কুমিল্লাজুড়ে মিষ্টান্নের অনেক চাহিদা রয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়াতে অন্য জেলাগুলো ও ঢাকা-চট্টগ্রামে খুব সহজে মালামাল পাঠানো যায়। সমতট অঞ্চলে দুগ্ধজাত পণ্য প্রাচীনকাল থেকে যেমন চাহিদা ছিল, তেমনি অদুগ্ধজাত মিষ্টান্নরও চাহিদা রয়েছে।

প্রসঙ্গত লেডি কেনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মিষ্টি। এটি হালকা ভাজা লালচে-বাদামি এবং দেখতে গোলাকার। ছানা ও ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়। শেষে চিনির তরল রসের মধ্যে ভেজানো হয়। ১৮৫৬-৬২ সালের মধ্যে ভারতে গভর্নর জেনারেল চার্লস ক্যানিংয়ের স্ত্রী লেডি ক্যানিংয়ের নামে নামকরণ করা হয় এই মিষ্টির। লেডি ক্যানিংয়ের মৃত্যুর পর তার সম্মানে ভিম চন্দ্র নাগ নামের একজন কারিগর এই মিষ্টি প্রস্তুত করেছিলেন বলে জানা যায়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //