কোম্পানীগঞ্জে সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে একাধিক সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্তত দুইটি সড়কে শুরু থেকেই নিম্নমানের ইটের খোয়া, ইট-বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে বেড়ি থেকে লাহরির টেক পর্যন্ত শেখ সামছুল হক সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া, নিম্নমানের এজেন্ট ব্যবহার ও কার্পেটিং কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। নিম্নমানের বিটুমিন ও বুজুরি ব্যবহার করে কার্পেটিং করায় সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে আনুমানিক ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বেড়ি থেকে লাহরির টেক পর্যন্ত শেখ সামছুল হক সড়কের প্রথম অংশের ১৯০০ মিটারের এই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে সড়কটির কার্পেটিং কাজ একেবারে শেষ প্রান্তে। এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুতে ১৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের লাহরির টেক থেকে রফিক নগর পর্যন্ত ৮২০ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। এ সড়কটির ম্যাকাডম এর কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

জানা যায়, সরকারের জিওবি মেন্টেনেজ প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই নির্মাণকাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এইচ আর এন্টার প্রাইজ। এরমধ্যে দুটি রাস্তার কাজ করছেন ঠিকাদার ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু নামে এক ব্যক্তি। সেখানে নিম্নমানের ইট, ইটের খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি সড়কের পাশে থাকা গাইড ওয়ালও নিম্নমানের ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিডিউলের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত দুটি সড়কে নিম্নমানের কাজ করছেন ঠিকাদার। কাজের শুরু থেকেই তদারকি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এসব অনিয়ম করে চলছে। এতে নিম্নমানের ডাম্পিং খোয়া, নিম্নমানের বালু ও ইট ব্যবহার করা হয়েছে।

এতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলছে, সামনে বর্ষায় সব উঠে যাবে। এত খারাপ রাস্তা করার কি দরকার? উপজেলার আগের সড়ক গুলোর ফলাফল বিশ্লেষণে মিলে অভিযোগের সত্যতা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও সড়কের পাশের গাইড ওয়ালও নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকেরা বলছেন, ঠিকাদার যে রকম ইট-বালু দিচ্ছেন, তা দিয়েই তাদের রাস্তা নির্মাণ করতে হচ্ছে। একাধিক শ্রমিক নিম্নমানের ইট ও ইটের খোয়া ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকারও করেন।

এ সময় স্থানীয়রা তদারকি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন। তারা বলেন, উচ্চ পর্যায় থেকে কোম্পানীগঞ্জের সকল ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নোয়াখালীর আওতায় বাস্তবায়িত কাজ গুলো সঠিক ভাবে অন্তত একবার তদন্ত করা হোক। তাহলে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। কারণ তদারকি প্রতিষ্ঠানের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরকারি শিডিউল অনুযায়ী উন্নয়ন কাজের মান নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এ দুটি সড়কের বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মিকে তথ্য দিতে তালবাহানা করে সংশ্লিষ্ট তদারকি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, শিডিউল মেনে ভালো মানের কাজ করা হয়েছে। কিছু ইটের খোয়ার বিষয়ে অভিযোগ এলে তা রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।  

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শেখ মাহফুজুল হোসাইন বলেন, সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার অভিযোগ পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। তিনি আরও বলেন, সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। তবে এলাকাবাসী তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে দুষছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। তারা বলছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা থাকায় নিম্নমানের কাজ হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //