কাপ্তাই হ্রদের পানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির ওপর নির্ভর করে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। হ্রদে পানির পরিমাণ বেশি থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বেড়ে যায়। 

বিশেষত করে বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ যখন পানিতে টইটম্বুর থাকে, তখন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারটি ইউনিট পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অচল থাকলেও বাকি চার ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় ২৩০ মেগাওয়াট। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। হ্রদে পানির পরিমাণ কমতে থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগে থেকে অচল রয়েছে। 

কিন্তু অন্য চারটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও পানি সংকটের কারণে দুইটি ইউনিটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। হ্রদের পানির পরিমাণ আরো কমতে শুরু করলে আরো দুইটি ইউনিটের মধ্যেও উৎপাদন বন্ধ রাখতে হবে। তবে যদি বৃষ্টিপাত হয় অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। 

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শাখা সূত্রে জানা গেছে, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল (মীনস সি লেভেল)। কিন্তু বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ৮৫ দশমিক ৫১ এমএসএল। 

বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে দুইটি ইউনিট সচল রয়েছে, তার মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটে বর্তমানে ৩৫ মেগাওয়াট ও ৩ নম্বর ইউনিটে ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে। হ্রদে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট একযোগে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। 

বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের বলেন, ‘আপাতত কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। সচারাচর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বৃষ্টি হয় না। প্রতি বছরই খরার সময়ে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যায়, তখন কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়। 

তিনি বলেন, তবে কোনো কোনো সময় জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও ভারি বৃষ্টিপাত হবার রেকর্ড রয়েছে। সেরকম হঠাৎ করে বৃষ্টি নামলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে, তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি করা হবে। এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় আকাশের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //