ফায়ারম্যান গাওছুলের গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া

অগ্নিদগ্ধ ফায়ারম্যান গাওসুল আজমকে (২৩) নিয়ে চিকিৎসকরা যখন ব্যস্ত তখনো রবিবার (৫ জুন) ঘড়ির কাটায় সকাল সাড়ে ৭টা। তার পিতা আজগার আলীর ঘরে মোবাইলে শুধুই রিং হচ্ছে। আজগার ফোনটি রিসিভ করতে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার সার্ভিস কার্যালয় থেকে জানানো হয় গাওসুল অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট হাসপাতালের বেডে। মুহূর্তেই পরিবারে উপর যেন বজ্রপাতে আঘাত করে। 

মণিরামপুরের খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আজগারের একমাত্র ছেলে গাওসুল। ২০১৮ সালে ফায়ারম্যান পদে যোগদান করেন। বর্তমানে তার কর্মস্থল ছিল বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ থানায়। ছয়মাসের ডেপুটেশন হিসেবে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে ছিলেন। গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে যখন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সেখানে ছুটে যান গাওসুলসহ তার সহকর্মীরা। সেখানে তার গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে তার সহকর্মীদের মৃত্যু ঘটলেও গাওসুল তখনো প্রাণে বেঁচে আছেন। রাতেই তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট হাসপাতালে আনা হয়। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়।


প্রতিবেশি জাহাঙ্গীর আলম জানান, গাওসুলের শরীরের বিভিন্ন অংশে ৭০% পুড়ে গেছে। সকালে খবর পেয়ে পিতা আজগার, চাচা আকবার আলী, একমাত্র ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানসহ আত্মীয় স্বজনরা ছুটে গেছেন ঢাকায়। 

রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেদক গাউসুলের খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে গেলে চোখে পড়ে কেবল মানুষের ভিড়। গ্রামের নারী-পুরুষ যেন সবাই বাকরুদ্ধ। গাওসুলের মা আছিয়া বেগম কেবল বুকে হাত থাপড়াচ্ছেন। আর মুর্ছা যাচ্ছেন, বলছেন আমার বাবাকে আল্লাহ তুমি আমার কাছে সুস্থ করে ফিরিয়ে দাও। তোমার কাছে আমার ছেলের ভিক্ষা চাই। গাউসুলের ছয়মাস বয়সী একমাত্র ছেলে সিয়াম মানুষের ভিড়ে প্রতিবেশিদের কোলে রয়েছে। নির্বাক তার স্ত্রী কাকলী খাতুন। কোনো কথাই বলতে পারছেন না। গাওসুলের এই দুঃসংবাদে কেবল পরিবার নয়, খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামবাসীকে বাকরুদ্ধ করে ফেলেছে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //