পুঠিয়ায় শহিদ নাদের আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা

পুঠিয়ার বানেশ্বরের শহিদ নাদের আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়েছেন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহাবুব আলম বাবু শেখ।

গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরের সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নুরুল আমিন নান্নু কলেজে গিয়ে তার কক্ষে তালা মারা দেখেন। পরে তিনি স্টাফ কক্ষে গিয়ে অবস্থান নেয়।

বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকগণ এবং গভর্নিং বডির সদস্যরা অধ্যক্ষের পক্ষে প্রতিবাদ শুরু করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুইপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় অবস্থান নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় পুঠিয়া থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এসময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের চাপে সভাপতি বাবু শেখ তার ঘনিষ্ঠজন এস এল শামসুল আলম বাবুর মাধ্যমে অধ্যক্ষের কক্ষের তালা খুলে দেয় হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

অধ্যক্ষ নুরুল আমিন নান্নু জানান, গত বছরের ১৩ নভেম্বর তারিখে মাহাবুব আলম বাবু শেখ ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিযুক্ত হন। অষ্টম শ্রেণি পাস হওয়ায় আমি তার সভাপতি নিয়োগ নিয়ে প্রতিবাদ জানাই। এসময় তিনি আমার প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন বই নিজের কব্জায় নিলে তার সাথে আমার বিরোধ শুরু হয়। পরে আমি আদালতের দারস্ত হই। তিনি গতকাল ১২ আগস্ট অবৈধভাবে আমাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে বরখাস্ত করেন। যা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী। এ ঘটনায় গভর্নিং বডির ১২ সদস্যের মধ্যে ৮ সদস্যই ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। এতে বর্তমান কমিটির বৈধতা নিয়ে অধ্যক্ষ প্রশ্ন তুলেন।

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাবুব আলম বাবু শেখ বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার পর বেশ কয়েকটি মিটিং করি। এছাড়াও সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের দিয়ে একটি মতবিনিময় সভাতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও তার স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। ওই সভায় প্রতিষ্ঠানে স্কুল এবং কলেজ শাখাকে একত্রে করার প্রস্তাবনা আসলে সেটা রেজুলেশন করা হলে অধ্যক্ষ ওই রেজুলেশন মোতাবেক কাজ না করায় আমি রেজুলেশন বই নিজের আয়ত্তে নিয়েছি।

এছাড়াও অধ্যক্ষ আমাকেসহ তিনজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেন। সেটাও গত সপ্তাহের আদালত খারিজ করে দেন।

অধ্যক্ষকে অবৈধভাবে বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে বরখাস্ত করেছি। বর্তমানে অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এছাড়াও আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছে রেজুলেশন বই দিয়ে দিয়েছি বলে এ সভাপতি জানান।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরোধের জের ধরে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা উভয় পক্ষকে শান্ত করেছি। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //