রাতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান, ফের আন্দোলনে চা-শ্রমিকরা

নতুন মোড় নিয়েছে চা-শ্রমিকদের আন্দোলন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা-শ্রমিকরা রবিবার (২১ আগস্ট) রাতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আবারও ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন।

সোমবার (২২ আগস্ট) সকাল থেকে শ্রমিকনেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজে ফিরেছিলেন কয়েকটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা। কিন্তু অন্যান্য বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দেওয়ায় তারাও কাজ বন্ধ করে ধর্মঘটে অংশ নেন।

তারা ‘রাতের অন্ধকারের সিদ্ধান্ত মানেন না বলে জানিয়েছেন। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলনে অনড় রয়েছেন তারা। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রী যদি সরাসরি ভিডিও কলে তাদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেন তাহলে তারা আন্দোলন প্রত্যাখান করে কাজে যোগ দেবেন।

এদিকে ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক লছনা বাজার নামক স্থানে দুই ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখে মাকড়িছাড়া ও গান্ধী ছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা। পরে তারা সড়ক থেকে সরে গিয়ে নাট মন্দিরে অবস্থান নেয়। অপরদিকে মৌলভী চা বাগান এবং ফিনলে এর কালিঘাট চা বাগানের শ্রমিকরাও কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘রবিবার রাত ৯টায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দীর্ঘ সেই বৈঠক শেষ হয় রাত তিনটার দিকে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে, আজ সোমবার থেকে শ্রমিকরা ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে যোগ দেবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলে নিজেদের দাবি দাওয়া জানাবেন তারা।

কিন্তু গভীর রাতে শেষ হওয়া বৈঠকের সিদ্ধান্ত আজ সকালে জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন চা শ্রমিকরা। বিভিন্ন ভ্যালি এবং পঞ্চায়েত কমিটির নেতারাও কেন্দ্রীয় নেতাদের ওই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির ওপরই অনাস্থা প্রকাশ করছেন ভ্যালি এবং পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতিরা। সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে তারা ৩০০ টাকা মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

কালিঘাট চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি অবন তাঁতি বলেন, আমরা নেতা তৈরি করছি, আমরা টাকা দিয়েই বানিয়েছি। তারা যদি আমাদের সুযোগ সুবিধা না দেখে তাহলে আমরা কিভাবে নেতা মানবো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি ছিল ৩০০ টাকায় মজুরি বৃদ্ধি করলে আমরা আর আন্দোলন করবো না কিন্তু আমাদেরকে কিছু না জানিয়ে নেতারা কীভাবে ডিসি অফিসে সিদ্ধান্তে আসে। আমাদের একটাই কথা-প্রধানমন্ত্রী যেনো আমাদের ৩০০ টাকার দাবি মেনে নেয়।

মৌলভী চা বাগানের শ্রমিকরা বলেন, ‘চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কোনো ভ্যালি বা পঞ্চায়েত কমিটির সাথে কথা বলেনি। তারা এখন শ্রমিকদের জোরপূর্বক কাজে যোগ দেওয়াতে চাইছে। আগের মজুরিতেই যদি কাজে ফিরতে হয়, তাহলে আমরা কেন এতোদিন না খেয়ে ধর্মঘট করলাম?

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ৮ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন চা শ্রমিকরা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //