সাতক্ষীরায় টানা বৃষ্টিতে ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ, আতঙ্কে উপকূলবাসী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

বিশেষ করে উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস। উপকূলীয় অঞ্চলে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত জারি করা হয়েছে।

এদিকে, নিন্মচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে  উপকূলের মানুষ! 

উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, গতকাল থেকেই থেমে থেমে হালকা, মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। ইতিমধ্যে ভারী বর্ষণের কারনে শতাধিক ঘের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালি, তিন নম্বর পোল্ডারসহ বিভিন্ন এলাকায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতিমধ্যে নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের সময় বাঁধের কানায় কানায় পানি উঠছে।

আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান, তার ইউনিয়নের গদাইপুর এলাকায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে ৬-৭ হাত জারজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। পরে দুপুরের মধ্যে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে তা

সংস্কার করতে সক্ষম হয়। তবে, পরবর্তী জোয়ারে কি হবে তা বলা যাচ্ছে না। 

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গপোসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আগামী ২-১ দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকবে তারপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গত ২৪ ঘন্টায় ৫৯.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, নদীতে এখন জোয়ার রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে প্রায় ৩ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ ও ২-এর আওতায় মোট ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কি.মি বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //